সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় টানা বৃষ্টি ও ভারি বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদীর তীরবর্তী এলাকা তীব্র ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে।
গত ৪ দিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ৩ টি বাজর, ১৫ টি গ্রাম অর্ধশত বসতবাড়ি ও ফসলি জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে গেছে। হুমকির মধ্যে রয়েছে মন্নান ঘাট বাজারে লঞ্চঘাট, রামনগর বাজার, সাচনা রামনগর সড়ক, আমানীপুর বাজার, চানপুর, সংবাদপুর দক্ষিণ কামলাবাজ, গজারিয়া, অলীপুর, রামপুর, নুরপুর গ্রাম সহ অর্ধশত বসতবাড়ি বিলীনের পথে। নদী ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার। এসব সুরমার ভাঙ্গনে কবলে পড়ে অর্থনৈতিক সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। জামালগঞ্জ সদর ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল হুদা জানান, প্রতিবছর নদী ভাঙ্গনে হারিয়ে যাচ্ছে জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মানচিত্র। বিগত কয়েক বছরের সদর ইউনিয়নের তেলিয়া দক্ষিণ কামলাবাজ, নয়াহালট, চাঁনপুর, কদমতলী, লক্ষ্মীপুর, সোনাপুর, সংবাদপুর, মান্নানঘাট বাজারসহ কয়েকশত পরিবার ভাঙ্গনের কবলে পড়ে অন্যত্র সরে যেতে হয়েছে।
চলতি বছর বর্ষা মৌসুমে শুরুতেই পাহাড়ি ঢলে বড় ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে মন্নানঘাট বাজারটি। এই বাজারটি এই অঞ্চলের সবজি, কাঁচামাল ও টমেটোর জন্য প্রসিদ্ধ। এই বাজারে বিআইডব্লিউটির এর একটি জেডি রয়েছে। এই বাজার থেকে স্পিডবোর্ড, মোটরসাইকেলে প্রতিদিন ধর্মপাশা, নেত্রকোনার হাজারো লোকজনের সুনামগঞ্জ জেলা শহরের সাথে একমাত্র মাধ্যম এই বাজারটি। অপরদিকে সাচনাবাজার ইউনিয়নের রামনগর বাজার, নুরপুর গ্রাম এবং সাচনা রামনগর বাজারের যোগাযোগের একমাত্র রাস্তাটি হুমকির মুখে। নুরপুর গ্রামে এ পর্যন্ত শতাধিক পরিবার নদী ভাঙ্গনে ভিটা মাটি হারিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। এই গ্রামের মসজিদটিও নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জামালগঞ্জ সুনামগঞ্জ সড়কের নোয়াগাঁও বাজার থেকে রূপাবালী গ্রামের পাশের রাস্তাটি ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের শরৎপুর, কামলাবাজ, লম্বাবাঁক, কালিপুর হিন্দু কালিপুর, হোসেনপুর, কামিনীপুরের বাজার সুরমার ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকীন নুর বলেন, পানি বাড়ার সাথে সাথে উপজেলার সুরমা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন অধিদপ্তরকে এলাকা পরিদর্শন করে প্রতিবেদন করে রিপোর্ট করতে বলেছি।
সুনামগঞ্জ জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন নদী ভাঙ্গনের বিষয়ে আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। উনারা যদি জরুরী ভিত্তিতে কাজ করতে বলেন তাহলে আমরা কাজ শুরু করব।