সিলেটের বালাগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি মানিক মিয়া ও তাঁর পরিবারের ওপর এক নৃশংস হামলায় লয়লুছ মিয়া নামে একজন নিহত এবং অন্তত তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়।
মানিক মিয়া বর্তমানে বাসস্ট্যান্ডের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর বড় ছেলে সজীব সুমন এবং ভগ্নিপতি আবদুল্লাহ আল মামুন (বর্তমানে যুক্তরাজ্যে প্রবাসী) উভয়েই সক্রিয় বিএনপি কর্মী।
ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার (১০ মে) বিকেলে সিরিয়া বাসস্টপে একটি বাসের হর্ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডা থেকে। এরপর মানিক মিয়া ও সহকর্মী সুমন খান বাজারে যাওয়ার পথে, একই গ্রামের সুমন মিয়া নামের এক ব্যক্তি তাঁদের সঙ্গে ফের বাগবিতণ্ডায় জড়ান।
একপর্যায়ে সুমন মিয়া, সুমন খানের গায়ে হাত তোলেন।মানিক মিয়া প্রতিবাদ করে সুমন খানকে রক্ষা করেন। এসময় সুমন মিয়া তাঁকে (মানিক মিয়াকে) প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে সেখান থেকে চলে যান।
প্রায় এক ঘণ্টা পর, সুমন মিয়া তাঁর ভাই ইউনুস আলীসহ আরও অন্তত ১০–১২ জনকে সঙ্গে নিয়ে ডাকবাংলা রোডে মানিক মিয়ার ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালান।
ভাই লয়লুছ মিয়া তাঁকে বাঁচাতে এলে তাকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে আরও দুজন এগিয়ে গেলে তাঁরাও হামলার শিকার হন।
গুরুতর অবস্থায় স্থানীয় লোকজন আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
লয়লুছ মিয়ার অবস্থা অবনতি হওয়ায় তাঁকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হলে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় ১৩ মে, বালাগঞ্জ থানায় ইউনুস আলীকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা (নং: ২, তারিখ: ১৩/৫/২০২৫) দায়ের করা হয়। তবে এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযুক্তরা ‘ইউনুস বাহিনী’ নামে পরিচিত একটি ভয়ংকর গোষ্ঠীর সদস্য, যারা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।
পরিবারিক প্রতিক্রিয়া মানিক মিয়ার ছেলে সজীব সুমন বলেন, আমার চাচা শুধু বাবাকে রক্ষা করতে গিয়েই নিহত হয়েছেন।
আমি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি—এভাবে যেন আর কেউ দলের নাম ভাঙিয়ে অপরাধ করতে না পারে।
আমি ও আমার পরিবার এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই এবং খুনিদের ফাঁসি দাবি করছি।
বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ফরিদ উদ্দিন আহমদে ভুঁইয়া বলেন, এই ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।