বালাগঞ্জের পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের 'পৈলনপুর ঈদগাহের ফটকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিনের চাচাতো ভাই, যুক্তরাজ্যপ্রবাসী রানু মিয়ার নাম ফলকে উল্লেখ করাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়দের দাবি, সরকারি বরাদ্দ ও প্রবাসীদের অর্থায়নে সম্পন্ন এই ঈদগাহের সংস্কারকাজে ব্যক্তিগত স্বার্থে নাম ফলক বসিয়ে জনমত উপেক্ষা করেছেন চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে মবশর আলীর ছেলে চমক আলী ১২ মে বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগপত্রে চেয়ারম্যানসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয় এবং ২২ জনকে সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করে ৮০ জন গ্রামবাসীর স্বাক্ষর সংযুক্ত করা হয়। অভিযোগপত্রের অনুলিপি বিভিন্ন সরকারি দপ্তরেও পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে অবস্থিত পৈলনপুর ঈদগাহটির পুনঃনির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। এতে গ্রামবাসী এবং যুক্তরাজ্যপ্রবাসীদের ব্যক্তিগত অর্থায়নের পাশাপাশি সিলেট জেলা পরিষদ থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকার সরকারি অনুদান পাওয়া যায়। সবমিলিয়ে ২০২৪ সালে সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়।
কিন্তু সংস্কারের পর ঈদগাহের মূল প্রবেশফটকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শিহাব উদ্দিন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তার চাচাতো ভাই ধনাই মিয়া ওরফে রানু মিয়ার নাম ফলকে বসিয়ে দেন। গ্রামবাসীর মতামত উপেক্ষা করে একক সিদ্ধান্তে তিনি এ কাজ করেন, যা এলাকাবাসীর ধর্মীয় ও সামাজিক অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্যরা শান্তিপূর্ণ আলোচনার জন্য ৩১ মার্চ, ঈদুল ফিতরের আগের রাতে চেয়ারম্যানকে বসার আহ্বান জানান। কিন্তু তিনি আলোচনায় অংশগ্রহণ না করে উল্টো হুমকি দিয়ে বলেন—এই নাম আজীবন থাকবে, কেউ মুছতে পারবে না। অভিযোগে আরও বলা হয়, চেয়ারম্যানের নির্দেশে রাসেল মিয়া ও সুমন আহমদ ঈদগাহে ঈদের জামাত পড়তে গ্রামবাসীদের বাধা দেন এবং হুমকি প্রদান করেন। ফলে অধিকাংশ মুসল্লি পাশের নতুন মসজিদে ঈদের জামাত আদায় করেন।
এছাড়া, অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয় যে, চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন বিগত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কর্মী পরিচয়ে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে টেন্ডারবাজি ও নানা অনিয়ম করে আসছেন। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তিনি বিএনপির স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন বলেন, “২০২৩ সালে ঈদগাহের সংস্কারে প্রায় ৩৪ লাখ টাকা ব্যয় হয়, যার মধ্যে প্রায় সব অর্থই দিয়েছেন প্রবাসী রানু মিয়া। তাই সবার সম্মতিতেই উৎসাহ প্রদানমূলকভাবে তার নাম ফলকে দেওয়া হয়েছে।
বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিত কুমার চন্দ অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।