সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামে ফেসবুকে মাদকবিরোধী পোস্ট দেওয়ার জেরে এক কলেজছাত্রীর ঘরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। আগুনে লাকরি রাখার ঘরের অনেকটা পুড়ে গেছে। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে পুরো পরিবার।
মঙ্গলবার (১৪ মে) দিবাগত রাত আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটের দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবার। তাদের দাবি, কে বা কারা ডিজেল বা পেট্রোল জাতীয় দাহ্য পদার্থ ছিটিয়ে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাত ৩টার দিকে আগুন নজরে আসে। প্রতিবেশী বিল্লাল, সফিকুল, সাহেলসহ কয়েকজন পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন, তবে ততক্ষণে ঘরের বাইরের অংশসহ টিন ও মালামাল পুড়ে যায়।
ভুক্তভোগী সাজমিন আক্তার সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার পিতা শফিক মিয়া ওয়েজখালী বাজারের একটি কাপড়ের দোকানে কর্মচারী।
সাজমিন জানান, ‘মাদকসেবীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে “সুনামগঞ্জ হেল্পলাইন” ফেসবুক গ্রুপে একটি পোস্ট দিই। এরপর থেকেই হুমকি পেতে থাকি। আমরা মনে করি, এই ঘটনার পেছনে গুচ্ছগ্রামের নূর হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান জড়িত। সে এলাকায় চিহ্নিত মাদকসেবী হিসেবে পরিচিত। বাবা রাতে দেরিতে বাড়ি ফেরেন। আমি খুব ভয় পাচ্ছি, যদি তাকেও কিছু করে ফেলে।’
প্রতিবেশীদের জানান, চিৎকার শুনে আমরা বের হয়ে দেখেছি আগুন। পরে সবাই মিলে আগুন নেভাই। ঠান্ডা দিনের কারনে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয় নি। কিন্তু যদি গরম এর দিন হতো তাহলে আগুনে আশেপাশের ঘরের ক্ষতি হতো।
সাজমিন এর বাবা জানান, গ্রামে মাদক সেবন, ইভটিজিং, মোবাইল চুরি এবং প্রকাশ্যে খুনের হুমকি দেওয়ার মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে মেহেদীর বিরুদ্ধে ।তার ভয়ে আমি বাসা থেকে বের হচ্ছি না। তার কার্যকলাপ ও ভয়ভীতির কারণে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মেহেদী হাসানের সাথে যোগাযোগ করতে তার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায় নি। তার বোন ফারজানা জান্নাত জানান, এদের সাথে আমাদের গতকাল ঝামেলা হয়েছে। আগুন আমার ভাই লাগায় নি। এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।
অভিযুক্ত মেহেদীর মা জানান, আমার ছেলে আগউন দেয় নি। আমরা ঘুমে ছিলাম আগুন লাগার পরে সবার চিৎকার শুনে আমরা আগুন দেখতে পেয়েছি। সে এখন কাজে আছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম বলনে, 'আমি স্বাক্ষীর জন্য জেলার বাইরে আছি। আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছে। তাদের মধ্যে আগের দন্দ ছিলো। আগুন কারা দিয়েছে তা কেউ দেখেনি। বাকিটা তদন্ত শেষে জানানো হবে।’