ফের গোলাপগঞ্জ বাজারের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হকারদের দখলে চলে যাওয়ায় যানযট এখন চরম আকারে ধারণ করেছে । গোলাপগঞ্জ চৌমুহী হচ্ছে একটি জনগুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। এ পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ কানাইঘাট, মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করেন।
এমনকি পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের মালামাল সিলেট সহ দেশ বিভিন্ন জায়গায় এ সড়ক দিয়েই পৌঁছে। জনগুরুত্বপূর্ণ সিলেট-জকিগঞ্জ-বিয়ানীবাজার-বড়লেখা সড়কের মূল পয়েন্ট গোলাপগঞ্জ চৌমুহনী।
কিন্তু কোন ধরণের তদারকি না থাকায় গোলাপগঞ্জ চৌমুহনীর দু’পাশের ফুটপাতজুড়ে একসময় গড়ে উঠেছিল ভাসমান দোকান। এসব ভাসমান দোকানের কারণে স্কুল-কলেজ যাতায়াতে ছাত্রী ও বাজারে আসা নারীরা পড়তে হতো নানা বিপাকে। আর সন্ধ্যার পর এসব দোকানের আড়ালে চলতো মাদকের ছড়াছড়ি।
চৌমুহনীর মার্কেটের ব্যবসায়ী ও সচেতন মহলের অভিযোগে ২০১৭/১৮ সালের দিকে তৎকালিন পৌরসভা কতৃপক্ষ ও থানা প্রশাসনের সহযোগিতায় গোলাপগঞ্জ চৌমুহনী হকারমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়ে সফল হয়েছিলেন। কিন্তু কিছু দিন পরপরই পুণরায় ফুটপাত দখল করেন ভাসমান দোকানিরা পাশাপাশি যত্রতত্র সিএনজি-অটোরিক্সা ও ব্যটারী চালিত রিক্সার কারণে পূর্বের চেয়ে আরও বেশি জঞ্জালে পরিণত হয়েছে এ পৌর শহর ।
গোলাপগঞ্জ চৌমুহনীর প্রচীনতম ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আলী স্টোরের ম্যানেজার এনাম আহমদ অভিযোগ করে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন অভিযোগ করে পৌর মেয়রের মাধ্যমে দোকানের সামন পরিস্কার করিয়েছিলাম। কিন্তু এখন মেয়রও নেই আর কেউ তদরকিও করেনা, এজন্য যে যেভাবে পারছে ফুটপাত দখল করে বসছে। এতে করে দোকানের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
রুবিনা হোটেলের সত্ত¡াধিকারী সুলতান আহমদ সবুজ সিলেটকে জানান, আমাদের হোটেলের সামনে সবসময় অটোরিক্সা থাকায় আমাদের যেমন ব্যবসায় অসুবিধা হচ্চে তেমনি মানুষ চলাচল করতে পারছে না। বিশেষ করে নারীরা গোলাপগঞ্জে মার্কেটে এসে ভাসমান ব্যবসায়ী ও ব্যাটারী চালিত রিক্সার কারণে হাটাচলা করতে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
ফুলবাড়ি থেকে আসা ছোটন মিয়া নামে এক ক্রেতা বলেন, পরিবার-পরিজন নিয়ে মার্কেট করতে এসেছি, এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে যেতে হলে হাটাচলা সম্ভব হয় না। হাটাচলার রাস্তা দখর করে বসে আছে ভাসমান দোকান ও গাড়ি। এভাবে চললে মানুষজন মার্কেটে আসবে কেমনে।
এব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্ল্যাহ বলেন, মানুষ চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে ব্যবসা করা ও গাড়ি রাখা বেআইনী। ফুটপাত দখলমুক্ত করা প্রশাসনের পক্ষে একা সম্ভব হয়। বাজার কমিটি, ব্যবসায়ী, প্রশাসনসহ সকলে সম্মিলিতভাবে মানুষ চলাচলের রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, স্থায়ী ব্যবসায়ীরা চাইলে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানের সামন পরিস্কার করতে পারেন। প্রয়োজনে আমরা সহযোগিতা করব।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিলটন চন্দ্র পাল বলেন, গোলাপগঞ্জ চৌমুহনীসহ আশপাশের ফুটপাত দখলমুক্ত করতে শীঘ্রই আমরা ব্যবসস্থা নেব। আমি জেনেছি, চৌমুহনী থেকে ফুটপাত উচ্ছেদ করা হয়েছিল, ইদানিং কিছু কিছু স্থানে আবার আগের মতো দখল হয়ে গেছে। আগামীকাল বিজয় দিবস। বিজয় দিবসের পর পরই আমরা বাজার বণিক সমিতি, ব্যবসায়ীসহ সকলকে নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আগের মতো ফুটপাত দখলমুক্ত করা হবে।