বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

চরম বিপাকে পরিবার

বাবার বয়স ৭৫ বছর আর ছেলের বয়স ১৩৮ !

এনআইডি কার্ডে পিতা পুত্রের বয়সের ব্যবধান নিয়ে এলাকায় হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। এনিয়ে নানা রসাত্বক আলোচনা এলাকায়। এই বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন অফিসে সংশোধনের আবেদন করে কোন সমাধা পাচ্ছেন না ভুক্তভোগি পরিবার। জাতীয় পরিচয় পত্রটির জন্য ঐ ব্যক্তি তার ছেলে মেয়ে স্কুল মাদ্রাসায় ভর্তি করতে পারছেন না। ফলে পড়েছেন চরম বিপাকে।

জন্মনিবন্ধন নিয়ে তৈরী হয়েছে জটিলতা। তিন মাসে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন হয়নি। 

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য স্থানীয় কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার ভুক্তভোগি জিতু মিয়া আবারও জন্মনিবন্ধন সংশোধনের জন্য নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আবেদন করেছেন।

 জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুক্তভোগি জিতু মিয়াতে তার বাবার হারিছ মিয়ার চেয়ে ৬৩ বছর বেশি দেখানো হয়েছে। এনআইডি অনুযায়ী সে তার বাবার চেয়ে ৬৩ আগেই জন্ম নিয়েছে। শুনতে অবিশ্বাস্য  হলেও বয়স নিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে, নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ার ভাঙা ইউনিয়নের মান্দার কান্দি গ্রামের ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের উত্তর পাড়া গ্রামের মধ্যে। 

ভুক্তভোগীর হারিছ মিয়ার ছেলে জিতু মিয়া জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য বলছে, বাবা হারিছ মিয়ার জন্মতারিখ ১৯৫০ সালের ১ লা মার্চ। আর ছেলে জিতু মিয়ার জন্ম তারিখ ১৮৮৭ সালের ২ মার্চ । সে হিসেবে বাবার বর্তমান বয়স ৭৫ বছর তিন মাস ১৮ দিন, আর ছেলের বয়স ১৩৮ বছর ২ মাস ৫ দিন। অর্থাৎ বাবার চেয়ে ছেলে ৬৩ বছর ২ মাসের বড়। তার বর্তমান জন্মনিবন্ধন আবেদন অনুযায়ী  তার জন্ম তারিখ ১৯৮৭ সালের ২ মার্চ। কিন্তু সেখানে লেখা হয় ১৮৮৭ সালে তার জন্ম হয়েছে।

ভুক্তভোগী জিতু মিয়া বলেন, ১৫ থেকে ২০ বছর খানেক আগে বিদেশে ছিলাম তখন দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট করে দেশের বাহিরে ছিলাম তখনকার পাসপোর্ট ছিল হাতের লেখা, পাসপোর্টে আর জাতীয় পরিচয় পত্রে কোন মিল নাই। এখন আমার ১২ বছরের ছেলে মাদ্রাসায় ভর্তি করানোর জন্য মাদ্রাসায় গেলে আইডি কার্ডে (জাতীয় পরিচয়পত্রে) ১৩৮ বছর বয়স এই সমস্যা ধরা পড়ে। 

২০২৫ সালে চারটি মাস গত হলেও আমার জন্ম নিবন্ধন সঠিক না হওয়ার কারনে আমার মেয়ে কে মাদ্রাসায় ভর্তি দেয়নি। তাই আমি আমার ছেলে মেয়ে লেখা পড়া ও ভর্তি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি।

তিনি আরও বলেন, ‘লেখাপড়া করিনি, তাই তেমন কিছুই বুঝি না। এত বেশি বয়স দেওয়া বুঝিনি। আমার বয়স বর্তমানে ৩৮ বছর ২মাস। আমার আইডি কার্ড ঠিক (সংশোধন) করতে গত তিন মাস আগে ইউনিয়ন পরিষদে ও নির্বাচন অফিসে গেছিলাম। চেয়ারম্যান সাবের নিকট আবেদন করেছি।  বয়স ঠিক করতে (জন্মনিবন্ধন) আবেদন করে টাকা খরচ করছি কিন্তু কোন কাজে আসতেছে না। আমি হবিগঞ্জ কোর্টে এফিডেভিট করে আজকে (মঙ্গলবার) নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আবেদন নিয়ে এসেছি এর পরে নির্বাচন অফিসার বলছেন তিনি ঠিক করে দিবেন। আজকে চার মাস ধরে ছেলে মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করতে পারছি না। 

জিতু মিয়ার বাবা হারিছ মিয়া বলেন, আমার ছেলে আইডি কার্ড এর মধ্যে বয়স বেশি দেখানোর জন্য যেমন মানুষ নানা রকম হাসি ট্রাট্টা করছে এবং সে ঐ কার্ড দিয়ে কোন  কাজই করতে পারতেছে না। “এইটা ঠিক হওয়ার হওয়ার জন্য বাপ বেটা দৌড়তে দৌড়তে জান শেষ” 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স ভুল যাদের রয়েছে সে গুলো আইন অনুযায়ী কোন ডকুমেন্টস ছাড়া সংশোধনের নিয়ম নেই । ওই ব্যক্তি অনলাইনে আবেদন  আমরা পেয়েছি কিন্তু তার সাথে কোন ডকুমেন্টস নেই। তিনি কোন লেখা পড়ার সাটিফিকেট দিতে পারেননি। তিনি লেখা পড়া করেননি, তার এনআইডি ভুল রয়েছে এখন আমরা বলছি সিভিল সার্জনের কাছে থেকে মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে আসতে তখন জন্মনিবন্ধন অবশ্যই সংশোধন করে দেওয়ার চেষ্টা করবো। আমরা জন্ম নিবন্ধনের সংশোধনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।

এমন ভুলের কারণ জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাচন কমিশনার উত্তম কুমার দাস বলেন, ‘মূলত ২০০৭ সালে যখন সার্ভারে ভোটার তালিকা করা হয়েছিল, তখনই বয়স ভুলের সমস্যাটি হয়েছে আবেদন করলে জন্ম নিবন্ধন ছাড়া সমস্যা সমাধান হবে না। আবেদনের সাথে তার অনলাইন জন্মনিবন্ধন সংশোধন থাকতে হবে, সংশোধন করা আবেদন পেয়েছি আমরা জন্মনিবন্ধন ছাড়া কিছু করতে পারবো না।

এই সম্পর্কিত আরো