✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সড়কপথে ধোপাজান নদীর বালু-পাথর লুট


আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে এখন সড়কপথে লুটপাট হচ্ছে ধোপাজান নদীর বালু-পাথর। এতদিন নৌপথে লুটপাট চললেও এখন চলছে সড়কপথে। প্রতিদিন দিনে ও রাতে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তৎপরতা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, এলাকার দেলোয়ার ও সাদেক নামে একটি চক্র অবৈধভাবে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ডলুরা পূর্বপাড়ে শতাধিক ট্রাক, ট্রাক্টর, ও পিকআপযোগে নদীর পাড় থেকে বালু-পাথর উত্তোলন করে সড়ক পথে সুরমা ইউনিয়নের হালুয়ার ঘাট বাজারের ক্রাশার মিলে বিক্রি করছে। ফলে মঙ্গলকাটা বাজার, চৌমুহনী বাজারসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট লেগেই থাকে।
মঙ্গলকাটা বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল হাদী জানান, দিনে ও রাতে এদের অত্যাচারে মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হন। অবিলম্বে এসব বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

গত ৬ অক্টোবর সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার চলতি নদীর (ধোপাজান) মোহনা থেকে অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলন ও পরিবহণ প্রতিরোধের জন্য সুরমা নদীর মোহনা চলতি নদীর প্রবেশ মুখ থেকে উত্তর সীমান্ত খাসিয়া পাহাড় পর্যন্ত অংশে সকল ধরণের বাল্কহেডসহ বালু পরিবহণে ব্যবহৃত জলযান প্রবেশ নিষিদ্ধ করে একটি আদেশ জারি করেন। তারপরও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আবারও সেই অবৈধ কারবার চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সদর উপজেলার সুরমা নদীর মোহনা থেকে চলতি নদীর প্রবেশ মুখে বাশেঁর বেড়া দেয়া হয়। যাতে বালু-পাথর পরিবহনের নৌকা যাতায়াত করতে না পারে। তাতেও কোনো লাভ  হয়নি। সন্ধ্যার পর পরই আবার নৌকা ঢুকতে শুরু করে।

এরপর পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান ঘটনাস্থলে গিয়ে নৌকা দিয়ে আড়াআড়িভাবে বাঁধ দিয়ে আটকানোর চেষ্টাও করেন।
জানা যায়, ২০১৮ সালের পর থেকেই সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ধোপাজান চলতি নদী ইজারাবিহীন আছে। তারপরও একটি চক্র নানা কৌশলে বিগত সরকারের আমলে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন করে। পটপরিবর্তনের পর এই মাত্রা আরো বেড়ে যায়।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের কাইয়ারগাঁও সহ সীমান্ত এলাকার অনেক গ্রামের পাশের এ নদীতে গভীর রাতে পরিবেশ বিধ্বংসী ড্রেজার ও সেইভ মেশিন দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলন চলছে অবৈধভাবে। ফলে ড্রেজার তান্ডবে বারকী নৌকা দিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের আয় রোজগারের পথ  বন্ধ হয়ে গেছে অনেক আগেই। বারকী শ্রমিক সংঘের সভাপতি নাছির উদ্দিন ও শ্রমিক নেতা সাইফুল আলম ছদরুল জানান, বৈধভাবে সনাতন পদ্ধতিতে বেলচা,বালতি দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলন করলে পরিবেশের কোন ক্ষতি হয়না এবং সাধারণ মানুষ কাজ করে সংসার চালাতে পারে। সরকার যদি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে ধোপাজান নদীর বালু-পাথর উত্তোলন করতো তাহলে ভালো হত।

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া জানান, তিনি বিজিবি'র অধিনায়ক, পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য বাহিনীর সাথে কথা বলে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেবেন। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইউএনও অতীশ দর্শী চাকমাও ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছেন। পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান বলেন, আমি ডিসি সাহেবের সাথে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এই সম্পর্কিত আরো