বালাগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে ফাজিলপুর এলাকায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের জন্ম হয়েছে। খসরুপুর জিসি-বালাগঞ্জ সড়কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ও সেতুটি বুধবার (৭ মে) সকালে হঠাৎ করে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সকাল ৮টার দিকে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় মুহূর্তেই স্থবির হয়ে পড়ে পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ।
এই সড়ক ভেঙে পড়ায় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ কর্মজীবী মানুষ সবাই পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। কেউ হেঁটে, কেউ বিকল্প পথে ঘুরে পেরোতে চেষ্টা করছেন — কিন্তু যাতায়াতে দুর্ভোগের শেষ নেই। নদীর পাড়ঘেঁষা গ্রামগুলোতে আতঙ্ক যেন ছায়া ফেলেছে।। স্থানীয়রা চোখের সামনে দেখছেন কীভাবে একটু একটু করে নদী গিলে নিচ্ছে তাদের অবকাঠামো ও নিরাপত্তা।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েকদিন ধরে কুশিয়ারার ভাঙন আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলছিল। ফাজিলপুর এলাকার সেতুর আশপাশে ফাটল দেখা দিলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। দীর্ঘ প্রায় ২৪ কিলোমিটার এই সড়কটি বালাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে শুরু হয়ে ওসমানীনগরের শেরপুর পর্যন্ত বিস্তৃত। অথচ এখন মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরবর্তী ফাজিলপুরেই পথ থেমে গেছে।
বিপর্যস্ত এলাকায় পরিদর্শনে যান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও সরকার মামুনুর রশীদ, উপজেলা প্রকৌশলী মুহিবুল্লাহ, পৈলনপুর ইউপি চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। তাঁরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন জানান, নদীভাঙনের পূর্বাভাস পাওয়ার পরই উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে বারবার জানানো হয়েছিল। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত পদক্ষেপের অভাবেই ঘটেছে আজকের এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। তিনি আরও জানান, হামছাপুরসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকায় আরও বড় ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।
অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএনও সরকার মামুনুর রশীদ জানান, জরুরি ভিত্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুতি চলছে।