রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫
রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

ওসমানীনগরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, মাড়াই উৎসবে মেতেছেন হাজারো কৃষক

চলতি বছরের বোরো ধান কাটা এবং মাড়াই উৎসবে মেতেছেন সিলেটের ওসমানীনগরের হাজারো কৃষক - কৃষাণীরা। সকাল-থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলায় পুরোদমে চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। আবার কিছু এলাকায় বিস্তৃর্ণ মাঠজুড়ে এখনও দোল খেতে দেখা যাচ্ছে সোনালী ধান। বাড়ছে শ্রমিকসংকটও। ধান কাটা-মাড়াইয়ে কৃষকের পাশাপাশি দিনমজুরদের মাঝেও বেড়েছে চরম ব্যস্ততা। তবে  আবহাওয়া নিয়ে কৃষকেরা চিন্তায় রয়েছেন। বড় ধরনের ঝড়বৃষ্টি হলে নষ্ট হবে ধান। 

গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত উপজেলার  বিভিন্ন  হাওরে ৭৫ ভাগ আর হাওর এলাকা ছাড়া ৩৫ ভাগ কর্তন করা হয়েছে।
এদিকে,  দ্রুত ধান কর্তনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস। 

উপজেলার  বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি হাওরে সোনালি ধানের দোলা দেখে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষকদের ঘরে ঘরে এখন নতুন ধানের উৎসব বিরাজ করছে। ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও কৃষাণীরা। কালবৈশাখী ঝড়ের আগেই কৃষকরা তাদের কষ্টের ফসলকে ঘরে নিতে চান।

তবে গত কয়েক দিন ধরে আকাশে গুমট ভাব কৃষককে বেশ চিন্তায় ফেলেছে। তারা শঙ্কায় আছেন কখন না জানি শিলা-বৃষ্টিতে তাদের সর্বনাশ ডেকে আনে। 

বানাইয়া হাওরের কৃষক তপন দাশ বলেন, অন্যান্যা বছরের তুলনায় এবছর বোরো ধানের ভালোই ফলন হয়েছে। শ্রমিক সংকটের কারণে নিজে নিজেই ধান কাটা শুরু করেছি। রোজ হাজার টাকায় বিনিময়ে ও লোক পাওয়া যাচ্ছেনা। আর হারভেষ্ট(ধান কাটার মেশিন) ও বিঘা প্রতি নিচ্ছে ২৫০০ টাকা করে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর এবং  অর্জিত হয়েছে ৬ হাজার ৬৫০ হেক্টর। যা গত বছরের থেকে ৪০ হেক্টর বেশি । আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ হাজার ২৫০ টন।  প্রাকৃতিক দূর্যোগে আক্রান্ত না হলে আশা করা যাচ্ছে ফলন লক্ষমাত্রা থেকে বেশি হবে। উপজেলার বিভিন্ন হাওরে এই পর্যন্ত বোরো ধান কর্তন করা হয়েছে ৭৫ ভাগ আর হাওর এলাকা ছাড়া ৩৫ ভাগ ধান কর্তন করা  হয়েছে। ধান কর্তনের  হারভেস্টার মেশিন রয়েছে মোট   ৩৭ টি এর মধে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ আছে  ৪ টি। ৩৩ টি  হারভেস্টার মেশিন বিভিন্ন হাওরে ধান কর্তন করছে। এছাড়া কৃষি প্রণোদনা হিসাবে এ বছর  ১ হাজার ৬০০ জনকে কৃষককে দুই কেজি করে হাইব্রিড ধানের বীজ দেওয়া হয়েছে। এবং  ২ হাজার ৮০০ জন কৃষককে  ৫ কেজি উফসী ধানের বীজ ও ২০ কেজি করে রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে।

কৃষক ছানার আলী বলেন, এবছর তিনি ১২ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছিলেন। ইতোমধ্যে ৭ বিঘা জমির ধানকাটা হয়েছে। এ বছর ফলন খুব ভালো হয়েছে। ধান কাটা শুরু করেছি। মারাইও দিয়েছি সবমিলিয়ে গত বছরের চেয়ে বেশিই হবে। সরকার যদি বেশি দামে ধান কিনে তাহলে আমরা আরও খুশি হবো।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবছর বোরো ধানের ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ওসমানীনগর 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ উম্মে তামিমা, আমাদের উপজেলার প্রায় প্রতিটি হাওরে বোরো ফসলের ফলন ভালো হয়েছে। হাইব্রিড ধানের এখন পর্যন্ত ৪.৭৫ মেট্রিকটন চাল উৎপাদন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বার্তা অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বন্যার সম্ভবনা নাই। বৃষ্টি অল্প হলেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস এখন নাই। 

হারভেস্টার মেশিন অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, হাওর এলাকায় হারভেস্টার মালিকদের আমরা বলে দিয়েছি ১৮০০ টাকা করে বিঘা প্রতি নিতে। তার পরও কারো কাছে থেকে অতিরিক্ত টাকা নিলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্যই বলে দিয়েছি কৃষকদের।

এই সম্পর্কিত আরো