শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫
শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
বিদ্যুতের খুঁটির সাথে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, স্কুল ছাত্র নিহত সুনামগঞ্জে হাওরে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিখোঁজ ২ মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি নেতা মতিন বক্সের পদ স্থগিত মাইলস্টোন ট্রাজেডি: নিভে গেল তাসনিয়ার প্রাণপ্রদীপ ভোটকেন্দ্র ও বাক্স দখলের নিয়তের স্বপ্ন ভঙ্গ হবে: সিইসি ১৩ বছর পর ঢাকার পথে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ছাত্রশিবিরের সিলেট মহানগরের উপশাখা প্রতিনিধি সমাবেশ-২০২৫ অনুষ্ঠিত দুই এলাকার সংযোগস্থলে কালভার্টের উদ্বোধন সাংবাদিকতার পেশায় ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগিদের আমরা দেখতে চাই না: জাকির
advertisement
সিলেট বিভাগ

নদী ভাঙন

গোলাপগঞ্জে কুশিয়ারা ও সুরমা নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে নদী পাড়ের লোকজন

গোলাপগঞ্জে উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া  খরস্রোতা কুশিয়ারা ও সুরমা নদী যেন নদীপাড়ের মানুষের জীবনের এক অভিশাপের নাম। দুটি নদীর অব্যাহত  ভাঙনে এতদঞ্চলের নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট,  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকানসহ ফসলি জমি। আর বর্ষা মৌসুমে এ  ভাঙনের আকার ধারন করে ভয়াবহ রুপে। এবারে বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই খরস্রোতা কুশিয়ারা নদীর ভাঙনের ভয়াবহতা কিছুটা বুঝতে পেরে ঝুকিপূর্ণ পরিবারের সদস্যরা  আগে থেকেই   আসবাবপত্র নিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার  প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে।  এ যেন নদী পাড়ের মানুষের দূর্ভোগের আরেক নাম নদী ভাঙন।

অব্যাহত ভাঙনের কারনে চরম হুমকির মুখে পরা  নদীপাড়ের মানুষদের একটাই দাবী  দ্রুত ভাঙন বন্ধে নিতে হবে কার্যকারী ব্যবস্থা।  প্রতি বছরের মতো আশা না দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধে দেখতে চান ব্যবস্থা।  কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী  শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান নামের এক বয়োজ্যেষ্ঠ  অভিযোগের সুরে বলেন, যেকোনো নির্বাচন আসলেই ভাঙন রোধের আশা দিয়ে যান জনপ্রতিনিধিরা  কিন্তু নির্বাচন পরে জনপ্রতিনিধিদের খুজে পাওয়া যায়না। এরকম হাজারো অভিযোগ রয়েছে নদীতীরবর্তী বাসিন্দাদের। 

জানা যায়, গোলাপগঞ্জ উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে দেশের দুই প্রধান নদী সুরমা ও কুশিয়ারা। উত্তরদিকে গোলাপগঞ্জ পৌরসভা, গোলাপগঞ্জ সদর ইউনিয়ন, বাঘা ও ফুলবাড়ি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সুরমা নদী আর বুধবারীবাজার, শরিফগঞ্জ, বাদেপাশা ও ভাদেশ্বর ইউনিয়নের একাংশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে খরস্রোতা কুশিয়ারা নদী।  

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সুরমা নদীর অব্যাহত ভাঙনের কারনে  বাঘা ইউনিয়নের পূর্বগাঁও, লালনগর, জালালনগর, খালোপাড়, কান্দিগাঁও, রস্তমপুর, মজিদপুর, তুড়কভাগসহ বিভিন্ন স্থানের অনেক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।  অব্যাহত ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বাঘা মাদরাসা, ঐতিহ্যবাহী রুস্তমপুর জামে মসজিদ ও হাতিমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ইতোমধ্যে মাদরাসার সীমানা প্রাচীরসহ সামনের অনেকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। 
অপরদিকে সুরমা নদীর দক্ষিণপাড়ে ঐতিহ্যবাহী সরকারি এমসি একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, রানাপিং আদর্শ  উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, চকরিয়া সুরমা ডাইক (নদী পাড়ের সড়ক ) ভাঙনের মুখে রয়েছে। এমসি একাডেমি নদীভাঙন থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরে রয়েছে। এদিকে রানাপিং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।  

কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে বুধবারীবাজার, শরিফগঞ্জ, বাদেপাশা ও ভাদেশ্বর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বসতবাড়ি, সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদরাসা, ইউনিয়ন কমপ্লেক্স, পাকা সড়ক, হাটবাজার, দোকানপাট ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে। একের পর এক নদীপাড়ের ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেশ কয়েকটি হাট-বাজারসহ অনেক স্থাপনা ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বুধবারী বাজার ইউনিয়নের কালিজুরি চন্দরপুর বাজার থেকে লামাচন্দরপুর, বনগাঁও থেকে বুধবারিবাজার ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত চরম ভাঙনের মধ্যে রয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে এলাকার অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাঘিরঘাট উচ্চবিদ্যালয় ও চন্দরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। চন্দরপুর ও কালিজুড়ি এলাকার বিশাল অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বসতভিটা হারিয়ে মানুষ অন্যের বাড়িতে, হাওরে অথবা কোনোরকমে অস্থায়ীভাবে ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে আশ্রয় নিয়েছেন।

নদীর ভাঙনের কারণে বুধবারী বাজার ইউনিয়নের অনেকে মাথা গোজার জন্য ঝুপরি ঘর তৈরী করে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।  আবার কেউ কেউ পরিবারের আয়ের শেষ সম্ভল  কৃষিজমি ও বসতভিটাসহ সব হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন । 

কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের খাটকাই কুশিয়ারা বাজার ও মেহেরপুর বাজার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও রয়েছে নদীভাঙনের ঝুঁকিতে। পনাইরচক উচ্চবিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ইতোমধ্যে নদীগর্ভে চলে গেছে। খাটকাই-মেহেরপুর, বসন্তপুর কটলিপারা ও ডাইক রাস্তার বেশ কয়েকটি স্থান নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে চলে গেছে। এতে করে এসব এলাকার লোকজনকে বিকল্প রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে।

এদিকে বাদেপাশা ইউনিয়নের হাজিরকোনা গ্রাম থেকে ডেপুটিবাজার-মফজ্জিল আলী দ্বিপাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয়, বাগলাছয়ঘরি থেকে বাগলা বাজার এবং আছিরগঞ্জ খাল থেকে আমকোনা এলাকা এই ৩টি পয়েন্ট ভয়াবহ ভাঙনের মধ্যে রয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে মফজ্জিল আলী দ্বিপাক্ষিক উচ্চবিদ্যালয় ও গুরুত্বপূর্ণ বাগলা বাজার। ভাঙনে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ বসন্তপুর-কটলিপাড়া সড়কের বাগলা বাজার সংলগ্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় সড়কটির এই অংশ ধসে পড়ার আশঙ্কার কথা জানান এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে নদীতীরবর্তী লোকদের দাবী নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে অচিরেই এই জনপদের কয়েকশ ঘরবাড়ি ও কৃষিজমিসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।' নদীভাঙন থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষায়  পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

অন্যদিকে ভাদেশ্বর ইউনিয়নের শেখপুর জামে মসজিদ থেকে শাহ চম্পা (রহ.) এর মাজার পর্যন্ত এলাকা ভয়াবহ ভাঙনের মুখে রয়েছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে ইউনিয়নের গোয়াসপুর এলাকা ও শীতেশ্বর এলাকা। এছাড়া কুশিয়ারার ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের সুনামপুর বাজার ও ইসলামপুর এলাকা।

এই সম্পর্কিত আরো

বিদ্যুতের খুঁটির সাথে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, স্কুল ছাত্র নিহত

সুনামগঞ্জে হাওরে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিখোঁজ ২

মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি নেতা মতিন বক্সের পদ স্থগিত

মাইলস্টোন ট্রাজেডি: নিভে গেল তাসনিয়ার প্রাণপ্রদীপ

ভোটকেন্দ্র ও বাক্স দখলের নিয়তের স্বপ্ন ভঙ্গ হবে: সিইসি

১৩ বছর পর ঢাকার পথে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছাত্রশিবিরের সিলেট মহানগরের উপশাখা প্রতিনিধি সমাবেশ-২০২৫ অনুষ্ঠিত

দুই এলাকার সংযোগস্থলে কালভার্টের উদ্বোধন

সাংবাদিকতার পেশায় ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগিদের আমরা দেখতে চাই না: জাকির