শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন

কমলগঞ্জে নদী গর্ভে বিলীন বাড়িঘর, নি:স্ব হচ্ছে নিরীহ পরিবার

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে অপরিকল্পিতভাবে দীর্ঘদিন ধরে ধলাই নদী থেকে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলনে নিরীহ ৮টি পরিবারের বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরো ১০টি পরিবার। হুমকির মুখে রয়েছে গ্রামের আরো কয়েকটি বসতঘর। বিনষ্ট হয়েছে কৃষিজমি রাস্তাঘাট। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে মামলা, হামলার শিকার হতে হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। 

সরেজমিন রহিমপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ধর্মপুর গ্রামের গাঁ ঘেষে ধলাই নদী প্রবাহিত। লিজ নিয়ে নদী থেকে ইজারা গ্রহীতারা দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর যাবত বালু উত্তোলন করেন। বসতবাড়ির পাশ থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন হওয়ায় নদীর তলদেশ গভীর হয়ে উঠে। ফলে বর্ষায় পানির প্রবল ¯্রােতে নদীর পাড় ধ্বসে পড়তে শুরু করে। গত কয়েক বছরে এভাবে নদীর পাড় ধ্বসে ৮টি পাকা ও আধাপাকা বসতঘর বিলীন হয়ে গেছে। গ্রামের আইন উদ্দীন, হাজী দুরুদ মিয়া, হাবিল মিয়া, শামসুল ইসলাম, মো. দুরুদ, আলমাছ মিয়া, আনোয়ার মিয়া ও মাহমুদ মিয়ার ঘরগুলো নদীতে বিলীন হয়ে পড়ে। 

বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরও অর্ধেক অংশ শুন্যে নদীর উপর ভাসছে। আবার বাকি অর্ধেক অংশে ঝুঁকি নিয়ে কেউ কেউ বসবাসও করছেন। তবে গ্রামের কুটি মিয়া, সোনা মিয়া অন্যত্র গিয়ে ঘর তৈরি করে বসবাস করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন কোনরূপ সহায়তা পাননি। উপরন্ত বালু উত্তোলনকারী প্রভাবশালী মহল দ্বারা হুমকি, ধামকি ও মামলা হামলার শিকার হতে হয়েছে বলে তারা অভিযোগ তুলেন। ফলে তারা দু:খ-কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। 

বিগত সরকারের আমলে এই স্থান থেকে অব্যাহতভাবে বালু উত্তোলন হয়েছে। তবে সরকার পরিবর্তনের সাথে উত্তোলনকারীদের হাত বদল হলেও বালু উত্তোলন থেমে থাকেনি। স্থানীয়ভাবে আপত্তির পর উপজেলা প্রশাসন সম্প্রতি সময়ে এই স্থান থেকে বালু উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। 

গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত মাওলানা মো. জাকারিয়া, শামছুল ইসলাম, দুরুদ মিয়া বলেন, বসতবাড়ির পাশ থেকে বালু উত্তোলনের কারনে নদীর পাড় ধ্বসে বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। এখনও ঝুঁকির মুখে রয়েছে বেশ কয়েকটি বসতঘর। পার্শ্ববর্তী অনেক স্থান রয়েছে যেখোনে বালু উত্তোলনে বসতবাড়ির কোন ক্ষয়ক্ষতি হতো না সেখান থেকে তারা বালু উত্তোলন করেননি। 

এসব বিষয়ে গঠনমূলক প্রতিবাদ জানিয়েও আমাদের উপর মামলা দেয়া হয়েছে এবং জেল কাটতেও হয়েছে। তারা আরো বলেন, আইনে রয়েছে বালু উত্তোলনের কারনে কারো ক্ষয়ক্ষতি হলে ক্ষতিপুরন প্রদান করা। তবে এখানে উল্টো আরো হুমকি, ধামকি ও নাজেহাল হতে হয়েছে। ফলে পরিবার সদস্যরা কোন রূপ সহায়তা না পেয়ে মানবেতরভাবে জীবন যাপন করছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর জানান, অনেক আগেই এখানে পানি প্রবল ¯্রােতে বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে এই স্থান থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়েছে।

এই সম্পর্কিত আরো