পর্যাপ্ত ওয়ার্ড সুবিধা ও কলেজের নিজস্ব হাসপাতাল চালুর দাবি পূরণ না হওয়ায় সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনের ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
পরে ফটকের সামনে কালোব্যাজ ধারণ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীদের উপর সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ ও মারধরের নিন্দা জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।
মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী পিয়াস বলেন, “আমরা যৌক্তিক আন্দোলন করতে গিয়ে লাঠিচার্জের শিকার হয়েছি। আমাদের ৫৩ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এরমধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন ১০ জন। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। একই সঙ্গে আমাদের দাবির বাস্তবায়ন চাই।”
এদিকে কর্মসূচি চলাকালে দুপুরে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাক আহমেদ ভূইয়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক ফটক খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করার পরও শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যান।
মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, “আমি শিক্ষার্থীদের অনেক অনুরোধ করেছি ফটক খুলে ক্লাসে যাওয়ার জন্য। তাঁরা কথা শুনছে না। আমি তাদের কর্মসূচির বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।”
দ্রুত হাসপাতালের কার্যক্রম চালু, প্রয়োজনীয় ক্লিনিক্যাল ক্লাস (হাতে-কলমে শিক্ষা) নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবিতে রবিবার কলেজের সামনে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
এসময় রাস্তায় তীব্র যানজট দেখা দিলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ না করে অন্য উপায়ে আন্দোলন করার অনুরোধ করেন। তাঁরা অবরোধ তুলে না নেয়ায় একপর্যায়ে লাঠিচার্জ করে তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় তাদের ৫৩ জন ছাত্রছাত্রী আহত ও ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ঘটনার পর থেকেই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ শুরু করেন তাঁরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার সেনাবাহিনীর মেজর মেজবাহ উদ্দিন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সড়ক অবরোধ করার ফলে রোগীসহ সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ হচ্ছিল। তাই সেনা সদস্যরা সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে ওইদিন রাতেই ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে মেডিকেল কলেজে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। লাঠিপেটার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং জাড়িতরেদর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। এছাড়াও সারাদেশের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের, তাদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান করেন তাঁরা।