সারাদেশে এসএসসি পরীক্ষার আজ দ্বিতীয় দিন। অনেকে বাবা-মাকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলেও তৃশার গল্পটা ছিল ভিন্ন। মঙ্গলবার পরিক্ষার দ্বিতীয় দিনে বাবার লাশ বাড়িতে রেখেই পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেন খাদিজা আক্তার তৃশা। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অপরদিকে এসএসসি পরীক্ষার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে বাবার ব্যাথা বুকে নিয়েই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন খাদিজা আক্তার তৃশা। কারণ বাবার স্বপ্ন ছিল মেয়ে বড় হয়ে লেখাপড়া করে সরকারি চাকরি করবে।
হৃদয় বিদারক এই ঘটনা ঘটেছে জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের ছোট ঘাগটিয়া গ্রামে। ওই গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে তৃশা এবছর জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী।
সরেজমিনে জানাযায়, আব্দুর রাজ্জাক সোমবার রাতে শ্বাসকষ্ট ও কিডনি জনিত রোগে নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন। নিহত আব্দুর রাজ্জাকের ২ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তান রয়েছে। তৃশা তার দ্বিতীয় সন্তান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। মঙ্গলবার সকালে ১০ টায় তার জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
এসএসসি পরিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার তৃশা বলেন, আমার বাবার স্বপ্ন ছিল আমি লেখাপড়া শিখে একজন আদর্শ শিক্ষক হবো। কিন্তু হঠাৎ করেই বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। বাবা মারা যাওয়ায় পরিক্ষা দেওয়ার মানসিকতা ছিলনা। কিন্তু বাবার স্বপ্নের কথা মনে করে অনেক কষ্টে পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। আল্লাহর রহমতে পরিক্ষা ভালো হয়েছে। সবাই আমার মরহুম বাবা ও আমার জন্য দোয়া করবেন।
জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিধান ভূষন চক্রবর্ত্তী বলেন, মেয়েটি আমার স্কুল থেকে এসএসসি পরিক্ষা দিচ্ছে। সে খুব মেধাবী ও বিনয়ী। হঠাৎ করে তার বাবার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছি। শিক্ষার্থী তৃশাকে আমরা সকল শিক্ষকগন মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছি। এবং পরিক্ষা কেন্দ্রে সে যেন সুন্দর ভাবে পরিক্ষা দিতে পারে সকলেই সার্বিক সহযোগিতা করেছি।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকীন নূর বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তৃশা যাতে সবগুলো পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো ফলাফল করতে পারে উপজেলা প্রশাসনপর পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।