মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ন্যাশনাল টি কোম্পানী, দেউন্দি টি কোম্পানী, বড়জান টি কোম্পানী, ফুলতলা চা-বাগানসহ বিভিন্ন বাগানের শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি-রেশন ও পূর্ণ উৎসব বোনাস প্রদানের দাবি জানিয়েছে চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটি। রোববার সন্ধ্যায় শমশেরনগরস্থ কার্যালয়ে জেলা কমিটির সভা থেকে এই দাবি জানানো হয়।
চা-শ্রমিক সংঘ জেলা কমিটির সহ-সভাপতি শ্যামল অলমিকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক হরি নারায়ন হাজরা, সহ-সাধারণ সম্পাদক সুভাষ গৌড়, নারী চা-শ্রমিক নেত্রী লক্ষèীমনি বাক্তি, সদস্য সুনীল কর, সামরতি মৃধা প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, চা-শিল্পের ইতিহাসে দেশে চা-শ্রমিকরা সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছেন। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির এই সময়ে অনেক বাগানের চা-শ্রমিকরা কাজ করেও প্রাপ্য মজুরি-রেশন ও উৎসব বোনাস পাচ্ছেন না। এনটিসির ১২টি চা-বাগান, দেউন্দি টি কোম্পানীর ৪টি বাগান, বড়জান টি কোম্পানীর চা-বাগানসহ বিভিন্ন বাগানের চা-শ্রমিকরা কাজ করেও প্রাপ্য সাপ্তাহিক মজুরি ঠিকমত পাচ্ছেন না।
এছাড়াও দীর্ঘদিন যাবত জুড়ি উপজেলার ফুলতলা চা-বাগানের শ্রমিকদের মজুরি-রেশন বন্ধ রয়েছে। শুধু তাই নয়, বিগত ফাগুয়া (লাল পূজা) উৎসবেও বিভিন্ন বাগানের শ্রমিকদের প্রাপ্য উৎসব বোনাস প্রদান করা হয়নি। চা-বাগান মালিকদের সাথে সম্পাদিত চুক্তি এবং চা-শিল্পে সরকার ঘোষিত নি¤œতম মজুরির গেজেট অনুযায়ী ফাগুয়ায় সকল চা ও রাবার-শ্রমিকরা উৎসব বোনাস হিসেবে ৩,৭১২.৮০ টাকা পাওয়ার অধিকারী। সেখানে বিভিন্ন বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের উৎসব বোনাসের পরিবর্তে কর্মে হাজিরার উপর নির্ভর করে উৎসাহ বোনাস প্রদান করে শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হয়।
সভা থেকে চা-শ্রমিক নেতারা সুস্থভাবে বেঁচে থাকা ও উৎপাদনে সক্রিয় থাকার প্রয়োজনে বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে ৬ সদস্যের পরিবারে ভরণ পোষণের খরচ হিসাবে ২০২৩-২৪ এবং ২০২৫-২৬ মেয়াদের জন্য নি¤œতম মজুরি নির্ধারণ এক পরিবারের সাপ্তাহিক প্রয়োজনের অনুপাতে চাল, আটা, ডাল, তেল, চিনি, সাবান, চা-পাতাসহ পূর্ণ রেশন প্রদান, ভূমির অধিকার প্রদান, চা-শিল্পে নৈমিত্তিক ছুটি (বছরে ১০ দিন) কার্যকর ও অর্জিত ছুটি প্রদানে বৈষম্যসহ শ্রম আইনের বৈষম্য নিরসন করে গণতান্ত্রিক শ্রমআইন প্রণয়ন এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মজুরি ও উৎসব বোনাস প্রদানের আহবান জানান।