ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মাদার ফিসারিজ খ্যাত বিশ্ব ঐতিহ্য টাঙ্গুয়ার হাওর বেড়াতে গিয়েছিলেন একদল পর্যটক। সেখানে গিয়ে তারা বেড়ানোর পাশাপাশি হাওরে ফেলা প্লাস্টিকবর্জ্য দিনভর সংগ্রহ করে তা আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে পরিবেশ রক্ষায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
বৃহস্পতিবার(৩ এপ্রিল)সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বিশ্ব ঐতিহ্য টাঙ্গুয়ার হাওরে এমনি ঘটনা ঘটেছে।
প্লাস্টিকবর্জ্য সংগ্রহ করে তা পুড়িয়ে ধ্বংস করার কাজটি করেছেন জেলার ছাতক উপজেলার লক্ষণসোম গ্রাম থেকে আসা দ্বীন মোহাম্মদ সাদিকসহ তার বন্ধগন। তার নেতৃত্বে একদল পর্যটক বেড়াতে গিয়ে হাওরের গোলাবাড়ী ওয়াচ টাওয়ার সংলগ্ন এলাকায় ছড়িয়ে থাকা চিপসের প্যাকেট, ওয়ানটাইম গ্লাস, প্লাস্টিকের বোতলসহ নানা বর্জ্য দেখে তা তা কুড়িয়ে সংগ্রহ করেন। পরে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দেন।
প্লাস্টিকবর্জ্য সংগ্রহকারী দীন মোহাম্মদ সাদিক জানান,হাওরের সৌন্দর্য রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের। হাওরের সৌন্দর্য রক্ষায় এটি আমাদের ছোট্ট প্রচেষ্টা ছিল মাত্র। পর্যটকদের প্রতি আহ্বান থাকবে তারা যেন প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলার ব্যাপারে সচেতন হন। আমরা আশাবাদী সকলের সচেতনতায় হাওরের জীব বৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব হবে।
পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলছেন,নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে সারা দেশ থেকে পর্যটকগন বর্ষায় নৌকা ও হাউজ বোটে পর্যটকগন আসছেন আনন্দ ভ্রমনে এসে প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলে যান। এতে করে দীন দিন হাওরের জীব বৈচিত্র্যে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমেও পর্যটকগন আসছেন। এসে একেই কাজ করছে এখনে। এখানে টুরিস্ট পুলিশ থাকলে কিছুটা হলেও আগত পর্যটকগন
প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলা বন্ধ করবে আর তাদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে।
টাংগুয়ার হাওর পাড়ের বাসিন্দা বোরহান মিয়া,শাহেন শাহসহ স্থানীয় বাসিন্দাগন জানান,বর্ষা মৌসুমে টাঙ্গুয়ার হাওরে বিভিন্ন ধরনের নৌকা ও হাউজ বোডে আর শুকনো মৌসুমে কম হলেও ৪থেকে ৫ লাখ পর্যটক আসেন। এসময় সাথে করে তারা পানির বোতল,পটেটো,চানাচুর, প্লাস্টিকের গ্লাস,ওয়ান টাইম থালাসহ প্লাস্টিকবর্জ্য নিয়ে আসে। এসব ব্যবহার শেষে প্লাস্টিকবর্জ্য ফেলে হাওরের পরিবেশের ক্ষতি করেন। এসব বর্ষার পুরো মৌসুম টাই ভাসতে থাকে পানিতে অনেক সময় পানিতে তলিয়ে যায়। আর শুকনো মৌসুমে এসব বর্জ্য হাওরের বিভিন্ন স্থানে জমা হতে দেখা যায়। আর ফসলী জমিতে ধানের আবাদ করার সময় পাওয়া যায়।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান,হাওরের পরিবেশ রক্ষায় পর্যটকদের স্বেচ্ছাশ্রম সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা দেখবাল করছি। তিনি আগত পর্যটকদের প্রতি প্লাস্টিকবর্জ্য না ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন।