✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

টাকা না দেওয়ায় মালিককেই ছিনতাইকারী সাজিয়ে মামলা

সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিক হওয়ার কারণে একটি ছিনতাই মামলার আসামি হয়ে জেল খাটতে হয়েছে সিলেট নগরীর ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই এলাকার মৃত আজমল হোসেনের ছেলে মো. আজহার হোসেন উজ্জ্বলকে। ঘটনার সঙ্গে কোনোরূপ সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও শুধুমাত্র অটোরিকশার মালিক হওয়ায় পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টরের (এসআই) সঙ্গে যোগসাজশে তাকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি ও মানহানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আজহার হোসেন উজ্জ্বল। 

পেশায় ব্যবসায়ী আজহার হোসেন রোববার (২৬ জানুয়ারি) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন এবং তাকে ছিনতাইকারী সাজিয়ে প্রচারণা বন্ধেরও দাবি জানান। 

ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী আজহার হোসেন লিখিত বক্তব্যে জানান, তিনি সিলেটের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানে হিসাবরক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি বাসা ভাড়া, দোকান ভাড়া ও সিএনজি অটোরিকশা ব্যবসা রয়েছে তার। সেই সিএনজি অটোরিকশার সূত্র ধরেই তাকে হয়রানিমূলকভাবে ছিনতাইকারী সাজানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০ জানুয়ারি রাত ৯টায় মোবাইল ফোনে আসা কলের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন যে, তার মালিকানাধীন অটোরিকশার চালক দুই সঙ্গীসহ এক নারী যাত্রীর কানের স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছেন এবং পালিয়ে যাওয়ার সময় অটোরিকশাচালকের সঙ্গী হামিদুর রহমান নামের এক ছিনতাইকারীকে আটক করা হয়েছে এবং অটোরিকশাচালক সাইফুল আলম লখন ও তার অপর সঙ্গী শাহারাজ পালিয়ে গেছেন। অটোরিকশার মালিক হিসেবে আহজার হোসেনকে থানায় যেতে বলেন ছিনতাই’র শিকার যাত্রীর অভিভাবক পরিচয়ে ফোন দেওয়া ওই ব্যক্তি। 

আজহার হোসেনের ভাষ্য, রাত সাড়ে ১০টার সময় তিনি কোতোয়ালি মডেল থানায় গেলে থানার সেকেন্ড অফিসার আব্দুল আলীম তাকে বাদি পক্ষের লোকজনের সাথে বিষয়টি মিটমাট করে সমাধান করার জন্য চাপ দেন। তখন বাদি পক্ষের লোকজন তার কাছে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। আজহার হোসেন তাতে সম্মত না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকিও দেওয়া হয়। থানা থেকে ফেরার পর  রাত ৩টার দিকে তার মোবাইল ফোনে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে কল করে জানানো হয় যে, তার সিএনজি অটোরিকশাটি সোবহানিঘাটে রয়েছে এবং সেখান থেকে সেটি নিয়ে যেতে বলা হয়। এর কিছুক্ষণ পরই এসআই মিজান আজহার হোসেনের বাসায় আসেন। গভীর রাতে গেট বন্ধ থাকায় তিনি চলে যান। পরে হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়ে এসআই মিজান বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য সকালের মধ্যে থানায় না গেলে ছিনতাইকারী হিসেবে মামলা দায়ের করা হবে। পরদিন সকালে আজহার হোসেন তার ভাই ও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে থানায় গেলে এস আই মিজান তাকে আটকে রেখে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান এবং হাজতে ঢুকিয়ে দেন। বিকেলে ছিনতাই মামলার আসামি হিসেবে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পরদিন অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি আদালত সবকিছু শুনে তাকে জামিন প্রদান করেন।

পুলিশের এমন আচরণে হতবাক ও বিস্মিত আজহার হোসেনের ধারণা, এসআই মিজান ও বাদির যোগসাজশে এই ঘটনায় তার কাছে টাকা দাবি, হয়রানি, গ্রেফতার মামলার আসামি করা হয়েছে।

আজহার হোসেন বলেন, ঘটনার মাত্র তিনদিন আগে তিনি সাইফুল আলম লখন নামের ওই চালকের কাছে তার গাড়ি ভাড়া দিয়েছিলেন। ঘটনার পর পুলিশকে সহযোগিতার জন্য তিনি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার রাধানগর গ্রামের মৃত আবুল খায়েরের ছেলে লখনের যাবতীয় তথ্য প্রদান করেন। ঘটনার সাথে ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা না থাকার পরও পুলিশ তাকে হয়রানি করতে তাকে। কোনোরূপ প্রমাণ বা তদন্ত ছাড়াই জোরপূবর্ক তার ছবি তুলে ছিনতাইকারী হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ করা হয়। এতে সামাজিকভাবে তার মান ক্ষুন্ন হয়েছে। 

আজহার হোসেনের দাবি, যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হোক। তার মতো কাউকে যেনো আর এভাবে হয়রানি না হতে হয় এজন্য তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সুদৃষ্টি কামনা করেন। পাশাপাশি এ ঘটনায় বিভিন্ন মাধ্যমে তার যে সব ছবি প্রকাশিত হয়েছে তা সরাতে ব্যবস্থাগ্রহণেও অনুরোধ জানান। 

এই সম্পর্কিত আরো