সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের ফসল রক্ষাবাঁধ নির্মান ধীর গতির কারনে উপস্থিত পরিবেশ কর্মী, রাজনৈতিক কর্মী ও গণমাধ্যম কর্মীরা কাজের অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এছাড়াও জেলার অনেক বাঁধের কাজেই শুরু হয়নি। গেল কয়েক বছরের মধ্যে এবার বাঁধের কাজ ডিমেতালে হচ্ছে বলেও জানানো হয়। কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করে এই কমিটিতে থাকবেন কী না,এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুরে সুনামগঞ্জে জেলা প্রশাসকের কায্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় গণমাধ্যম কর্মীগণসহ অনেকেই দাবি বাঁধের কাজের যে অগ্রগতি রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে,এর বেশিরভাগই কাগজে কলমে,বাস্তবে অগ্রগতি আর কম। তাহিরপুরের মাটিয়ান হাওরের জামলাবাজ বাঁধ,আম্বর বাঁধ,আলমখালির দক্ষিণের বাঁধ,গুরমার হাওরের ১১ ও ১২নম্বর বাঁধ,শাল্লার ভান্ডা বিল হাওরের নোয়াগাঁও ক্লোজার,হরিনগর ক্লোজার বাদাকাউরি বাঁধ,ছায়ার হাওরের গইচ্চাখালি ক্লোজারসহ জেলার হাওর গুলোর বিভিন্ন ক্লোজারে কাজ শুরু না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,পিআইসি এবং পাউবো’র সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর অবহেলায় ঝুঁকিতে পড়বে এবার কৃষকের ফসল। গেল কয়েক বছরের মধ্যে এবার বাঁধের কাজ ডিমেতালে হচ্ছে বলেও সভায় মত প্রকাশ করেন উপস্থিত বেসরকারি সদস্যগন।
জেলা হাওর রক্ষা বাঁধ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সদস্য গণমাধ্যম কর্মী দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী সভায় বলেন,আমরা ভেবেছিলাম পাঁচ আগস্টের পর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ভয় তৈরি হবে,সেটি হয়নি। এইটা খুই দুঃখের বিষয়। এমন অবস্থা চলতে থাকলে,এই কমিটিতে থাকা নিয়ে ভাবতে হবে বলে মন্তব্য করেন।
জেলা প্রশাসক ড.মোহাম্মদ ইলয়াস মিয়া জানান,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলেন,যদি কাজ আদায় না করতে পার,কৃষকদের চাষাবাদ করা ফসল হুমকির মধ্যে পড়ে,যারা ভাল করবে তাদের কথাও বলব,যারা মনোযোগি হবে না তাদের কথাও উর্ধ্বতনদের জানাবো। স্থায়ী ক্লোজারের অগ্রগতি ও বাস্তব অবস্থার প্রতিবেদন জানানো ও কেউ কাজ না করলে,ব্যবস্থা নেবে নির্দেশ দেন। ২৮ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাঁধের কাজ সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নিতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা না থাকলে,আমাদের কারো ঘটি বাটি ঠিক থাকবে না,এটি মনে রাখতে হবে।
প্রসঙ্গত,২০১৭সালে ঠিকাদার ও পাউবোর সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিতে ফসলডুবিতে সুনামগঞ্জে হাহাকার দেখা দেয়ায় জাতীয়ভাবে আলোচনায় ওঠে আসে। এক পর্যায়ে ২০১৮ সাল থেকে ঠিকাদারী প্রথার বদলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি’র) মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাঁধ করা শুরু হয়। এর দেখ ভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা ও জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটিকে। এই কমিটির সভাপতি জেলা জেলা প্রশাসক ও সদস্য সচিব পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী। উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সভাপতি ও সদস্য সচিব পাউবো’র উপজেলার দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী। এবারও বাঁধের কাজ সেভাবে হচ্ছে। প্রায় চার হাজার কোটি টাকার ফসল অকাল বন্যার কবল থেকে রক্ষার জন্য নির্মিতব্য হাওর রক্ষা বাঁধের জন্য এই বছর বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে ১২০কোটি টাকা। এর মধ্যে তাহিরপুর প্রায় ১৩কোটি টাকা ব্যয়ে ৭৬ পিআইসি গঠন করা হয়েছে।