শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

গোলাপগঞ্জের গোয়ালগাদ্দা শিম এখন রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে

যতদুর চোখ যায় শুধু শিম আর শিম। দেশের চাহিদা মিটিয়ে এই শিম এখন রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। শীত মৌসুমের এই শিমটি স্থানীয়ভাবে  গোয়ালগাদ্দা উরি নামেই পরিচিত। বিশেষ জাতের সুস্বাদু এই সবজিটির চাষ মুলত সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় শুরু হলেও এখন সিলেট সদর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কিছু এলাকায় চাষ শুরু হয়েছে।  তবে কৃষকরা পরিশ্রমের  তুলনায় দাম কম পাওয়ায় এখন শিম চাষে উৎসাহ হারাচ্ছেন।

সরজমিনে উপজেলার লক্ষনাবন্দ ইউনিয়নের কাজিপাড়া, নিশ্চিন্ত, বিদাইটিকর, নোয়াই ও ঢাকাদক্ষিন ইউনিয়নের বারকেট, খর্দ্দাপাড়া,  লক্ষিপাশা ইউনিয়নের পালপাড়া, জাঙ্গালহাটা গ্রাম ঘুরে দেখা যায়  প্রতিটি জমিতে সারি সারি করে চাষ করা হয়েছে এই শিম। চোখের দৃষ্টিসীমা যত দূর যায়, বিস্তৃত মাঠজুড়ে যেন সবুজের চাদর বিছিয়ে রেখেছে এই অঞ্চলের চাষিরা। তবে চাষিদের অভিযোগ, এই শিম চাষ করতে যে পরিমাণ পরিশ্রম করেন সেই তুলনায় লাভ কম হওয়ায় দিনদিন এই  শিম চাষে আগ্রহ কমছে তাদের।

খান মোহাম্মদ ফুয়াদুল ইসলাম নামের এক কৃষকের অভিযোগ বড় আড়তদাররা সিন্ডিকেট তৈরী করে বাজার তাদের নিয়ন্ত্রে নিয়ে যায় এতে চাষিরা ন্যায দাম পায়না। কৃষকের পাশাপাশি নারীরাও বাসাবাড়ির আঙিনায় মাচা বেঁধে রোপণ করেন এই শিম।

ডিসেম্বরের শুরুতে  বাজারে আসতে শুরু করেছে এ শিম। ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে এ শিমের চাহিদা থাকায় নানা জটিলতা কাটিয়ে  রপ্তানি শুরু হয়েছে জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলেছে, এ বছর গোয়ালগাদ্দা শিম রপ্তানি বাড়বে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর শুধু গোয়ালাগাদ্দা শিমই হয়েছে এক হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে।

উপজেলার নিজ ঢাকা দক্ষিণ  গ্রামের নিতাই দেব জানান, দীর্ঘদিন ধরে শিম চাষের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। শিম চাষ করে যা আয় হয়, তা দিয়ে অনায়াসে তার পুরো বছর চলে যায়। তিনি বলেন, প্রায় দুই যুগ ধরে প্রতি শীতেই শিম চাষ করি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরোটা সময় নিজে তদারকি করি।

আব্দুল আহাদ সজলু নামের এক চাষি বলেন, এ বছর নিজে ২০ শতক জমিতে এবং তাঁর ভাই ৩০ শতক জমিতে গোয়ালগাদ্দা শিমের চাষ করেছেন। সপ্তাহ দুই আগে থেকে শিম বিক্রি শুরু করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, 'শুরুতে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা গেছে। এখন যত সময় যাচ্ছে দাম তত কমছে। সর্বশেষ ৪৫ টাকা দরে বিক্রি করেছি।'

উপজেলার বখতিয়ারঘাট গ্রামের আকবর আলী শিম ফলিয়েছেন ৭০ শতক জমিতে। তিনি বলেন, এবার ফলন ভালো হয়েছে। বিক্রিও শুরু করেছেন। 

এভাবে সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার আনাচে-কানাচে ফলন হওয়া এই শিম রোববার ও বুধবার  প্রথমে উপজেলার লক্ষনাবন্দ ইউনিয়নের স্থানীয় পুরকায়স্থবাজার ও  সোম ও বৃহস্পতিবার চৌধুরী বাজারে আনা হয় । সেখান থেকে পাইকাররা ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে করে নিয়ে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। 

বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফলন কিছুটা কম হওয়ায় ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। চৌধুরী বাজারের ব্যবসায়ী ফখরুল ইসলাম বলেন, ফলন কিছুটা কম হওয়ায় এবার শুরু থেকে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। গত সোমবার গোয়ালগাদ্দা শিম কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করেছি।

এই সম্পর্কিত আরো