মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার হাজিপুর ইউনিয়নের রনচাপ এলাকায় রাতের আধারে মনু নদীর বেড়িবাঁধ কেটে পাইপ বসানোর সময় মাটি চাপায় দিন মজুর বিজয় মালাকার (৪৭) নামে একজন নিহত হয়েছেন। এসময় মাটি কাটার কাজে ব্যবহৃত এক্সেবেটর জব্দ করেছে প্রশাসন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, রবিবার গভীর রাতে রনচাপ এলাকায় কুরপান মিয়াসহ কিছু লোক বোরো ক্ষেতে পানি নেয়ার জন্য মনু নদীর বেঁড়িবাঁধ এক্সেবেটর দিয়ে কেটে সেখানে পাইপ বসানোর কাজ শুরু করে। রাতে কুয়াশা ছিল। বাঁধ কেটে মাটি সরানোর পর নীচে গিয়ে মাটি সমান করার এক পর্যায়ে দুপাশের মাটি ধ্বসে পড়ে বিজয় মালাকারকে চাঁপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে লোকজন সেখান থেকে এক্সেবেটরের মাধ্যমে মাটি সরিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে কুলাউড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। নিহত বিজয় মালাকার ওই গ্রামের মৃত বারেন্দ্র মালাকারের ছেলে।
হাজীপুর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল ও স্থানীয় ইউপি সদস্য বিধান দত্ত জানান, রাতের অন্ধকারে মাটি কাটতে গিয়ে দিনমজুর বিজয় মালাকার মাটি চাপায় মারা যায়। পুলিশ এসে এক্সেবেটরটি তাঁর জিম্মায় রেখে গেছেন। এক্সেবেটরটি বর্তমানে ওই স্থানেই গ্রাম পুলিশের পাহারায় রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ এসেছে অন্তেষ্টিক্রিয়ার জন্য তাদের পাশে আমরা এলাকাবাসী রয়েছি।
নিহত বিজয় মালাকারের ছেলে অর্জুন মালাকার জানান, আমার বাবা কাজে যেতে চাননি। অনেকটা জোর করে কাজে নেন কুরপান মিয়াসহ স্থানীয় কয়েকজন লোক। অন্তেষ্টিক্রিয়া শেষে আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে আইনি পদক্ষেপ নেব।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান মোল্যা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ এখনও অভিযোগ দেননি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকোশলী খালেদ বিন ওয়ালেদ জানান, এবিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে কোনও অনুমতি নেয়া হয়নি বা কোনও আবেদনও করা হয়নি।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মহিউদ্দিন জানান, বাঁধ কাটা অন্যায়। এবিষয়ে তারা কোনও অনুমতি নেয়নি। এব্যাপারে দোষীদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।