বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
খেলাধুলা

বিপিএলকে ১০-এ ৭ দিলেন খুশদিল

ঢাকায় নামার পরদিনই গতকাল নিজের ছন্দে ঢুকে গেলেন খুশদিল শাহ। পাকিস্তানের এই স্পিন অলরাউন্ডার বিশ্রাম নেননি এক মুহূর্ত। সরাসরি চলে গেছেন রংপুর রাইডার্সের অনুশীলনে। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হাসিমুখে বললেন, 'বিপিএলকে আমি দশে সাত দেব।' কথার সুরে আত্মবিশ্বাস, চোখেমুখে প্রশান্তি। যেন জানিয়ে দিলেন, বাংলাদেশের ক্রিকেট তাকে দিয়েছে অন্তত দশে দশ ভালোবাসা। 

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সঙ্গে খুশদিল শাহের সম্পর্ক বহু দিনের। কুমিল্লা ও রাজশাহীর পর এখন রংপুরের জার্সি গায়ে খেলছেন তিনি। বিপিএলে চার বছর খেলেছেন। পাশাপাশি কয়েক মৌসুম খেলেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও। দীর্ঘ এই সময়ে পারিশ্রমিক নিয়ে কোনো নেতিবাচক অভিজ্ঞতা হয়নি তার। বরং উলটো তিনি বললেন, 'আমি যতবারই বাংলাদেশে খেলতে এসেছি, আলহামদুলিল্লাহ, পুরো পেমেন্ট পেয়েছি। এমনকি বোনাসও পেয়েছি।'

যেখানে প্রায় প্রতি আসরেই বিপিএলে পারিশ্রমিক নিয়ে কোনো না কোনো বিতর্ক দেখা দিয়েছে, সেখানে খুশদিলের এই বক্তব্যে একটুখানি স্বস্তির হাওয়া এসেছে। গতবারের টুর্নামেন্টেই রাজশাহীর এক দল ক্রিকেটার বেতন না পাওয়ার প্রতিবাদে অনুশীলন বর্জন করেছিলেন। এমনকি চেক বাউন্সের ঘটনাও ঘটেছিল। সেই প্রেক্ষাপটে রংপুর রাইডার্সের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর দায়িত্বশীলতা প্রশংসনীয়। 

খুশদিল নিজেই জানিয়েছেন, টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই খেলোয়াড়দের ৫০ শতাংশ পারিশ্রমিক পরিশোধ করেছে রংপুর। বিপিএলকে নিয়ে যখন অনেক বিদেশি ক্রিকেটারই অভিযোগ করেছেন সময়মতো টাকা না পাওয়া নিয়ে, তখন খুশদিলের মন্তব্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তার কণ্ঠে কৃতজ্ঞতা, 'রংপুর রাইডার্সের ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত ভালো। ক্রিকেটারদের ওপর নির্ভর করে কে কতটা শিখতে চায়। বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটারদের ভবিষ্যৎ খুব উজ্জ্বল।'

বাংলাদেশে তার যাত্রা শুরু প্রায় আট-নয় বছর আগে। সেই সময়ের কথা মনে করে খুশদিল হেসে বলেন, 'বাংলাদেশে না ভালো লাগলে কি বারবার আসতাম? আমি যেখানে যাই, নিজের একটা লক্ষ্য স্থির করে যাই। যত দ্রুত সম্ভব দলের পরিকল্পনার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করি।' 

বিপিএলেও তার পারফরম্যান্স উল্লেখযোগ্য। এখন পর্যন্ত ২৭ ম্যাচে রান করেছেন ৬০২। নিয়েছেন ২৯ উইকেট। ব্যাট হাতে তার স্ট্রাইক রেট ১৬৫। এই সংখ্যাটাই বলে দেয় শেষ দিকে নেমে কীভাবে ম্যাচের গতিপথ পালটে দিতে পারেন এই বাঁ হাতি ব্যাটার। তবে স্ট্রাইক রেটের হিসাব নিয়ে খুব একটা ভাবেন না তিনি। খুশদিল জানালেন, 'আমি কখনো স্ট্রাইক রেট দেখি না। ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাট করি। কখনো উইকেট কঠিন থাকে। তখন ৩০-৩৫ বলে ৪০/৫০ রান করলেও সেটাই দলের জন্য কাজের হয়।'

এই আত্মবিশ্বাসই তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলে। তার বিশ্বাস, বিপিএলে ভালো পারফরম্যান্সই গতবার পাকিস্তান জাতীয় দলে ফেরার পথ খুলে দিয়েছিল। এবারও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান তিনি। রংপুরের এই অলরাউন্ডার সোজাসাপটা জানিয়ে দিয়েছেন, 'বিপিএল আমার জন্য লাকি। গত বছর ভালো খেলেছিলাম বলেই জাতীয় দলে ফিরতে পেরেছি। এবারও চাই নিজের পারফরম্যান্সে দলকে জেতাতে।' 

এবারের আসরেও ভারসাম্যপূর্ণ দল গড়ে তুলেছে রংপুর রাইডার্স। ভালো প্রস্তুতি আর আত্মবিশ্বাস থাকলে রংপুর আবারও শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করেন খুশদিল।

এই সম্পর্কিত আরো