ভারতের উদ্দেশ্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের ঘরে যদি আগুন লাগে তাহলে আপনার ঘরও কিন্তু নিরাপদ থাকবে না। প্রতিবেশী যদি বিপদে পড়ে, প্রতিবেশীর ঘরের সেই আগুনও আপনার ঘরে পড়তে বাধ্য। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের উদ্যোগে ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য-বিরোধ সুরাহার পথ শীর্ষক’ এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সাইফুল হক বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, এমনকি ভারত যদি আমাদের (বাংলাদেশের) নিরাপত্তা নিয়ে টানাটানি করে, ভারতের নিরাপত্তাও তাহলে ঝুঁকির মধ্যে পড়তে বাধ্য। ভারতের যেমন অনেকগুলো কার্ড আছে, ঠিক তেমন বাংলাদেশের হাতেও কিছু কার্ড আছে। তারা যেহেতু বাংলাদেশকে অনেকগুলো পলিটিক্যাল স্টাটিজিক সুবিধা দিয়েছে, সেহেতু আমাদের উচিত চোখে চোখ রেখে তাদের সঙ্গে কথা বলা এবং আলোচনা করা।
নির্বাচন এবং সংস্কারকে পারস্পরিক মুখোমুখি দাঁড় করানো যুক্তিযুক্ত নয় বলে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এবং সংস্কার ছাড়া দেশ আর সামনের দিকে এগোতে পারবে না। এজন্য তিন মাস লাগলে তিন মাস দেবেন, ছয় মাস লাগলে ছয় মাস দেবেন। তবে এ সরকার সমস্ত সংস্কার শেষ করে যেতে পারবে না। তারা সংস্কারের ব্যাপারে স্টেকহোল্ডারের কাছে বোঝাপড়া করতে পারেন, তারা একটা জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে পারেন, সংস্কারের ভিত্তিগুলো শুরু করে যেতে পারেন। কিন্তু শেষ করা সম্ভব নয়।
ইসকনের ঘটনা প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এটা উস্কানি হিসেবে তৈরি করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু এখানে আমাদের মানুষ অসাধারণ ধৈর্যের পরিচয়, জাতীয় ঐক্য, ধর্মীয় সম্প্রীতির মেলবন্ধনেরও পরিচয় দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের এত বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের জায়গাটাই সবচেয়ে বড় শক্তি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষে একা সবকিছু সামাল দেয়া সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন সাইফুল হক।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষদের আহ্বায়ক শেখ আব্দুন নূরের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব বাবর চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় সরকার বিষয়ক কমিশনের প্রধান ড. তোফায়েল আহমেদ, আইনজীবী এডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব, বাংলাদেশ প্রতিদিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ প্রমুখ।