শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫
শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
পারমাণবিক সাবমেরিন শক্তিতে কে এগিয়ে? যুক্তরাষ্ট্র নাকি রাশিয়া ভারতের ওপর স্টিম রোলার চালিয়ে রেকর্ড বইয়ে তোলপাড় ক্রলি-ডাকেটের বিয়ানীবাজারে উচ্ছেদ অভিযানে স্বস্তি-শংকা নির্বাচন বিলম্বিত হলে ফের ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে: নজরুল ইসলাম খান সংসদের বাইরে সংবিধান সংশোধনের কোনো সুযোগ নেই: আমির খসরু ‘নির্বাচন যদি শাসন কাঠামোর গুণগত পরিবর্তন না আনে, তা হবে গণঅভ্যুত্থান হত্যার শামিল’ এক বছরে কোনো ম্যাচ না খেলেই বর্ষসেরা গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় ছাত্রনেতা অপু রিমান্ডে বড়লেখায় দিন-দুপুরে ছিনতাই ২জন গ্রেপ্তার টাকা ও মোবাইল উদ্ধার দুইদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে পাকিস্তানে পৌঁছালেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
advertisement
জাতীয়

বিশ্বমানের আইসিইউতে দগ্ধদের চিকিৎসা জরুরি

শ্বাসনালি পুড়লেই মৃত্যুর শঙ্কা

দ্রুত স্কিন প্রতিস্থাপন ও সংক্রমণ রোধ * ১৪ দিনের মধ্যে নতুন ত্বক গজায়
বয়স্কদের শরীরের পাঁচ ভাগের এক ভাগ এবং শিশুদের ১০ ভাগের এক ভাগ পুড়লে বিপদের আশঙ্কা থাকে। আর আগুনে শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হলে আক্রান্ত ব্যক্তির বাঁচার আশা ক্ষীণ হয়ে পড়ে। উন্নত দেশে দগ্ধ ব্যক্তিদের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বার্ন চিকিৎসায় অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের সমন্বয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে প্লাস্টিক সার্জনরা বার্ন চিকিৎসা দেন। এ কারণে দেশে বার্ন চিকিৎসায় আলাদা বার্ন চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফ সমন্বয়ে বিশ্বমানের অত্যাধুনিক আইসিইউ নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা জানান, এতে দগ্ধদের মৃত্যুহার কমবে।

চিকিৎসকরা জানায়, শুধু বাংলাদেশে নয়, উন্নত দেশেও শ্বাসনালি পোড়া ব্যক্তিদের মৃত্যুর হার ৯০ শতাংশের বেশি। দেশে বিশ্বমানের চিকিৎসক (প্লাস্টিক সার্জন) থাকলেও এককভাবে বার্ন চিকিৎসায় পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও অবকাঠামো গড়ে ওঠেনি। আইসিইউ, এইচডিইউ বা ওয়ার্ডে নির্ধারিত দূরত্ব রেখে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও জায়গার অভাবে তা করা সম্ভব হচ্ছে না।

বার্ন চিকিৎসক প্রফেসর ডা. মো. সাজ্জাদ খন্দকার যুগান্তরকে জানান, দেশে বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনায় বার্ন ইনস্টিটিউট ও ইউনিটগুলোতে দগ্ধদের ভর্তি করা হয়। সীমিত চিকিৎসক ও অবকাঠামোর মধ্যেও সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হয়। উন্নত দেশে দগ্ধ ব্যক্তিদের শতভাগই আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আলাদা করে বার্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স সমন্বয়ে পুরো চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। উন্নত দেশে আইসিইউতে প্রবেশে খুবই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। কারণ পোড়া রোগীদের ইনফেকশন ছড়ায় সবচেয়ে বেশি। শতভাগ ব্যাকটেরিয়ামুক্ত (গোসল করাসহ) হওয়ার পরই চিকিৎসক ও নার্সদের প্রবেশের অনুমতি মেলে। দেশে বার্ন চিকিৎসক ও আইসিইউ তৈরি জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জন বিষয়ক সেমিনারে অংশগ্রহণ ও পরিদর্শন করেছেন ডা. মো. সাজ্জাদ খন্দকার।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে শ্বাসনালি পোড়া রোগী (৫ থেকে ১০ শতাংশ পোড়া) এবং শরীরের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশের বেশি পুড়লেই আর বাঁচানো সম্ভব হয় না। তিন যুগের বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়-একেকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বার্ন ইনস্টিটিউটে গড়ে ৭০ জন থেকে ২০০ জন পর্যন্ত ভর্তি হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ রোগীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স এবং অবকাঠামোর মাধ্যমে স্কিন গ্রাফটিং শুরু করতে হয়। গ্রাফট বসাতে থাই থেকে মাঝারি ঘনত্বের চামড়া নিয়ে তা টেনে দিগুণ বা তিনগুণ করে সংশ্লিষ্ট স্থানে বিছিয়ে সেলাই করে দিতে হয়। কিন্তু, বেশির ভাগ দগ্ধ ব্যক্তির শরীর থেকে স্কিন নেওয়া সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে স্কিন ব্যাংক জরুরি হয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে বুধবার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ডা. নাসির উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, দগ্ধ রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উন্নত দেশে দগ্ধ রোগীদের আলাদাভাবে বার্ন চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফসহ অবকাঠামো রয়েছে। আমাদের লোকবল বাড়ানোসহ বিশ্বমানের অবকাঠামো তৈরি জরুরি হয়ে পড়েছে। অন্য দেশে একেকটি দগ্ধ রোগীকে আলাদা করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

প্রফেসর ডা. নাসির উদ্দিন আরও বলেন, শ্বাসনালি পোড়া দগ্ধদের চিকিৎসা বিশ্বের সব দেশেই খুব চ্যালেঞ্জিং। মৃত্যুর হারও বেশি। স্কিন চিকিৎসার মাধ্যমে মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে স্কিন ডোনেশনের (ত্বক দান) বিষয়টি নিয়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে দগ্ধ রোগীদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ রোধে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে-দগ্ধদের চিকিৎসা মানেই শঙ্কার, বাঁচার আশা ক্ষীণ।

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও বেশ কয়েকজন শঙ্কায় রয়েছে। এদিকে, ১৪ বছরে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুরান ঢাকার চকবাজারের রাসায়নিক পদার্থের গুদামে অগ্নিকাণ্ডে ৭৪ জন এবং নিমতলীর ঘটনায় ১২৪ জনের মৃত্যু হয়। তাদের সবার শ্বাসনালি পোড়া ছিল। গত বছর বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়।

মাইলস্টোনের ঘটনার পর অনেকেই স্কিন (চামড়া বা ত্বক) দান করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা বার্ন ইনস্টিটিউটে যোগাযোগ করছেন। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা জানান, ত্বক দানে অনেকে এগিয়ে এলেও ত্বক সংগ্রহের পদ্ধতি জানার পর-অনেকে অনীহা জানাচ্ছেন। পর্যাপ্ত ত্বক পাওয়া গেলে ৪০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া রোগীকেও বাঁচানো সম্ভব।

বার্ন ইনস্টিটিউট ও বার্ন ইউনিট মিলে বছরে ১০ লাখ দগ্ধ ব্যক্তির চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত আইসিইউ ও ত্বক সংগ্রহে না থাকায় ৩৫-৪০ শতাংশের বেশি পোড়া ব্যক্তিকে অনেক সময় বাঁচানো সম্ভব হয় না। আবার পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ দগ্ধ ব্যক্তির শ্বাসনালি পুড়লে তার মৃত্যুও ঝুঁকি থাকে।

বার্ন ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, দেশে শ্বাসনালি পোড়া ব্যক্তিদের বাঁচানোর নজির খুব একটা নেই। এ ধরনের রোগীর প্রথমত শ্বাসনালির গতিপথে অতিরিক্ত রক্তরস জমা হতে থাকে। একে পালমোনারি কনজেশন বলা হয়। এরপর পালমোনারি হাইপার টেনশন, পরবর্তী সময়ে শ্বাসনালির সব গতিপথ সরু হয়ে যায়। এ গতিপথে ধীরে ধীরে ইপিথেলিয়াল স্লাফ, ইপিথেরিয়াল কাস্টস জমা হয়। এ কারণে শ্বাসনালির সিলিয়ারি মুভমেন্ট বাধাগ্রস্ত হয় এবং এর গতিপথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।

স্কিন পাওয়া গেলে অনেককে বাঁচানো সম্ভব : স্কিন ব্যাংকের সমন্বয়কারী ও জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মাহবুব হাসান যুগান্তরকে বলেন, কখনো কখনো ৪০ শতাংশের বেশি পোড়া ব্যক্তিও যথাযথ স্কিন পাওয়া গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করা সম্ভব। কিন্তু দেশে জীবিত বা মৃত ব্যক্তির শরীর থেকে স্কিন সংগ্রহ মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়। এ বিষয়ে মানুষ খুব একটা জানেই না। মালয়েশিয়ায় ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ফার্স্ট স্কিন ব্যাংক ইন বাংলাদেশ : দ্য ওয়ে অব ওভার কামিং দ্য চ্যালেঞ্জেস’ শিরোনামের বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. মাহবুব হাসান। ওই প্রবন্ধে তিনি জানান, বাংলাদেশে স্কিন ব্যাংকের যাত্রা শুরুর পর দান করা ত্বক প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে ১০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জন বেঁচে গেছেন। মরণোত্তর ত্বকদাতার মৃত্যুর ১২ ঘণ্টার মধ্যে ত্বক সংগ্রহ করতে হয়। জীবিত দাতাদের ক্ষেত্রে ত্বক দান করার পর ১৪ দিনের মধ্যে শরীরে নতুন ত্বক গজায়। ত্বক দানে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান চিকিৎসক মাহবুব হাসান।

এই সম্পর্কিত আরো

পারমাণবিক সাবমেরিন শক্তিতে কে এগিয়ে? যুক্তরাষ্ট্র নাকি রাশিয়া

ভারতের ওপর স্টিম রোলার চালিয়ে রেকর্ড বইয়ে তোলপাড় ক্রলি-ডাকেটের

বিয়ানীবাজারে উচ্ছেদ অভিযানে স্বস্তি-শংকা

নির্বাচন বিলম্বিত হলে ফের ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে: নজরুল ইসলাম খান

সংসদের বাইরে সংবিধান সংশোধনের কোনো সুযোগ নেই: আমির খসরু

‘নির্বাচন যদি শাসন কাঠামোর গুণগত পরিবর্তন না আনে, তা হবে গণঅভ্যুত্থান হত্যার শামিল’

এক বছরে কোনো ম্যাচ না খেলেই বর্ষসেরা

গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় ছাত্রনেতা অপু রিমান্ডে

বড়লেখায় দিন-দুপুরে ছিনতাই ২জন গ্রেপ্তার টাকা ও মোবাইল উদ্ধার

দুইদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে পাকিস্তানে পৌঁছালেন ইরানের প্রেসিডেন্ট