সেনাবাহিনী কখনো কোনো রাজনৈতিক দলকে বিশেষভাবে সহায়তা করেনি এবং গোপালগঞ্জে যাদের জীবননাশের হুমকি ছিল তাদের সহায়তা করেছে বলে জানিয়েছেন মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। খবর বিবিসির।
শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে বিশেষভাবে কখনো কাউকে সহায়তা করিনি। এবং আমাদের দায়িত্বের মধ্যে আমরা কাউকে বিশেষভাবে দেখি না। গোপালগঞ্জে যেটা হয়েছে ওই রাজনৈতিক দলের অনেকেরই জীবন নাশের হুমকি ছিল। তাদের জীবন বাঁচানোর জন্যই সেনাবাহিনী সহায়তা করেছে। এখানে জীবন বাঁচানোই মূল লক্ষ্য ছিল অন্য কিছু না।
যে কোনো রাজনৈতিক দল কোথায় তাদের সভা, সমিতি ও বৈঠক করবে তা সাধারণত স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ জানতো।
গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির কর্মসূচিতে দফায় দফায় হামলা চলে। ওই ঘটনায় সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন।
সেখানে সেনাবাহিনী প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি বলে জানান শফিকুল ইসলাম ইসলাম। আত্মরক্ষার্থে তারা বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, এটা একটা অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি ছিল, যেখানে ইট-পাটকেলই শুধু নিক্ষেপ করা হয়নি- এখানে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। যখন সেখানে জীবন নাশের হুমকি ছিল তখন আত্মরক্ষার্থে আমাদের যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ছিল তারা বলপ্রয়োগ করেছে বা করতে বাধ্য হয়েছে। এখানে প্রাণঘাতী কোন অস্ত্রের ব্যবহার করা হয়নি।
গোপালগঞ্জে কী হয়েছিল সত্য ঘটনা উদঘাটনের জন্য অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ তদন্ত কমিটি সঠিক এবং সত্য ঘটনা উন্মোচনে সক্ষম হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
গোপালগঞ্জে ওইদিন সেনাবাহিনী সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলে আরও হতাহত বা জীবন নাশের সম্ভাবনা থাকতো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শফিকুল ইসলাম বলেন, বিশেষ কোনো দলের ক্ষেত্রে আমাদের আলাদা কোনো নজর নেই। আমরা দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সবাই আমাদের কাছে সমান। যেখানে জীবনের হুমকি আমরা আগেও বলেছি জনদুর্ভোগ বা জীবন নাশের হুমকি থাকে সেখানে আমরা কঠোর হই বা আমরা জনসাধারণকে সহায়তা করে থাকি। তো সেখানে আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করতাম তাহলে হয়তো আরও হতাহত বা জীবন নাশের সম্ভাবনা থাকতো। তো সেই হিসাবে আমরা এটা করেছি।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সকল বাহিনীকে একত্রে কাজ করতে হবে এবং যাদেরকে অগ্রভাগে কাজ করা দরকার তাদের আরও ইফেক্টিভ হতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
একইসঙ্গে সেনাবাহিনীকে যে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে তাতে তারা শুধু তল্লাশি এবং অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারে বলে জানান এই সেনা কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, অপরাধীকে গ্রেফতার করার পরে বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর করার পরে আসলে আমাদের আর কিছু করার থাকে না। এজন্য বলছি, যে সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সর্বাগ্রে কাজ করার দরকার তাদেরকে আরও ইফেক্টিভ হতে হবে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী নিরাপত্তা দিতে পারছে না, এটা ঠিক না। এটা সঠিক নয়। সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রোটেকশন নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে এবং ভালোভাবেই দিচ্ছে।