ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নসহ ১২টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ৮ হাজার ৫৮ কোটি, বৈদেশিক ঋণ ১৪৩ কোটি এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৫২ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের স্থায়ী বাসস্থানের জন্য ৩৬ জুলাই আবাসিক ফ্লাট নির্মাণ প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হলেও অনুমোদন দেওয়া হয়নি। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে বিফ্রিং করেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ।
তদন্ত হবে বিআরটি প্রকল্পের
ফেরত গেল জুলাই শহীনদের আবাসন প্রকল্প
পরিকর্পনা উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন করা গেলে অবকাঠামোগত দিক থেকে পূনাঙ্গ রূপ পাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২ হাজার ৮৪০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, ছাত্রী নিবাস, ছাত্রাবাস, সুইমিং, বিনোদন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
অনিমোদিত প্রকল্পগুলো হলো—দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২০টি (১২টি নতুন, ৮টি পুঃনির্মাণ) ফায়ার স্টেশন স্থাপন প্রকল্প, ব্যয় হবে ৬৫০ কোটি টাকা। এছাড়া বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জন্য লজিস্টিকস ও ফ্রিট মেইনটেনেন্স ফ্যাসিলিটিজ গড়ে তোলা প্রকল্প, ব্যয় ১৭৩ কোটি টাকা, গ্রামীণ স্যানিটেশন, ব্যয় ১ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। বহাদ্দারহাট বাড়াই পাড়া হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন, ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের রেলপথ রক্ষণাবেক্ষণ ও পূর্নবাসন, ব্যয় ১ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা।
মিরপুর সেনানিবাসে ডিএসসি এসসির অফিসার্স মেস ও বিওকিউ নির্মাণ, ব্যয় হবে ২৩৪ কোটি টাকা। কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ, ব্যয় ২ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা। উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আবাসিক প্রশিক্ষণ প্রদান, ব্যয় ৩৯৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের জাদুঘর ভবন সম্প্রসারণ ও অন্যন্য অবকাঠামো নির্মাণ, ব্যয় ১৬০ কোটি টাকা। কন্দাল ফসল গবেষণা জোরদারকরণ, ব্যয় ১০০ কোটি টাকা এবং স্মার্ট প্রিপেইড মিটারিং প্রজেক্ট, ব্যয় হবে ৭৭০ কোটি টাকা।
বিআরটি প্রকল্প নিয়ে তদন্ত হবে:
বিআরটি (বাস রেপিড ট্রানজিট) প্রকল্প তদন্ত করা হবে। সম্পুর্ণ অপরিকল্পিত এবং দানবীয় এ মেগা প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব একনেকে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু সেটি অনুমোদন না দিয়ে ফেরত দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কারা নকশা তৈরি করেছে। কিভাবে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সেখানে কি কি ত্রুটি আছে, কারা দায়ী সেসব বিষয় খতিয়ে দেখা হবে।
পালিয়ে যাওয়া ঠিকাদারদের বিষয়ে তদন্ত করা হবে:
পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, অসংখ্য প্রকল্প থেকে ঠিকাদাররা পালিয়েছে। কেন এবং কত টাকা নিয়ে পালিয়েছে সেসব খতিয়ে দেখতে আইএমইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তারা পিডি হিসেবে কেন ঠিকাদারদের বাড়তি টাকা দিয়েছেন। কিন্তু কাজ বুঝে নেননি, সেটিরও তদন্ত করা হবে।