কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সেখানে গুতেরেস রোহিঙ্গা ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং মিয়ানমারে তাদের ওপর চালানো গণহত্যার মর্মস্পর্শী বর্ণনা শোনেন।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুরে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে সরাসরি উখিয়ার বর্ধিত ২০ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান তারা।
বর্ধিত ক্যাম্প ২০-এর এইচ/২-এর ব্লক-৩-এর বাসিন্দা বদর আলম বলেন, ‘আমাদের মাঝিরা (রোহিঙ্গা নেতা) জাতিসংঘ মহাসচিবকে মিয়ানমারের অত্যাচারের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। কীভাবে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, চোখের সামনে স্বজনদের হত্যা করা হয়েছে, গণহত্যা চালানো হয়েছে- সবকিছু তুলে ধরা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের দেওয়া শর্তগুলো মেনে নিলে আমরা নিজ দেশে ফিরে যেতে রাজি। এই বিষয়টি জাতিসংঘ মহাসচিব ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতারা।’
লার্নিং সেন্টারের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, জাতিসংঘ মহাসচিব গভীর মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনেন এবং মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসার কারণ জানতে চান। মহাসচিব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও জোরালো ভূমিকা রাখার আশ্বাস দেন।
এরপর তারা রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্র ও ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এরপর রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করেন। এ সফরকে রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক মহলের জন্য নতুন বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন ও অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান। এই জনগোষ্ঠীকে ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা হওয়া জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গুতেরেস বলেন, ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের মানসম্মত জীবনযাপন প্রয়োজন। এটি নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে জাতিসংঘ। পাশাপাশি তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করার কথাও জানান তিনি।