বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর মিরপুর মডেল থানার একটি হত্যা মামলায় মানিকগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগমকে ৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানা রিমান্ডে নেওয়ার এই নির্দেশ দেন।
আজ দুপুরে মমতাজকে আদালতে হাজির করা হয়। তাঁকে আদালতের হাজত খানায় রাখা হয়। বিকেল তিনটার দিকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে মমতাজকে আদালতের এজলাসে হাজির করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার এসআই মনিরুল ইসলাম ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। মমতাজের পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। পরে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গতকাল সোমবার রাত পৌনে ১২টায় রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে তাঁকে আটক করা হয়। পরে মিরপুর মডেল থানার সাগর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়।
গত ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন মো. সাগর। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সাগর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় ২৭ নভেম্বর নিহতের মা বিউটি আক্তার বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়। মমতাজ এ মামলায় ৪৯ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, মামলার ঘটনাটি সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক গোপনে ও প্রকাশ্যে প্রাথমিক তদন্তে আসামি মমতাজের মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এই আসামি মামলার এজাহারনামীয় ৪৯ নম্বর আসামি।
ধানমন্ডি থেকে মমতাজ গ্রেপ্তারধানমন্ডি থেকে মমতাজ গ্রেপ্তার
আবেদনে আরও বলা হয়, তিনি মানিকগঞ্জ-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এবং সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলে জানা যায়। এই আসামি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাবেশ/আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে নিপীড়নে ক্যাডার বাহিনীকে উৎসাহিত করতেন। মামলার এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতপরিচয় পলাতক আসামিদের নির্দেশে, প্ররোচনায় এবং মদদে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের ক্যাডাররাসহ মমতাজের ক্যাডাররা বেপরোয়াভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাবেশ/আন্দোলনে আক্রমণ করে নির্বিচারে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে এবং তাঁদের ছোড়া গুলিতে মো. সাগর গুলিবিদ্ধ হলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটনসহ পলাতক আসামিদের অবস্থান নির্ণয় করতে তাঁকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।