রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫
রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
আইন-আদালত

বিচার বিভাগ সংস্কারের এই সুযোগ নষ্ট হলে চরম ক্ষতি হবে: প্রধান বিচারপতি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে বিচার বিভাগ সংস্কারের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে তা ব্যর্থ হলে, সেটি বিচার বিভাগের মর্যাদা, অখণ্ডতা এবং প্রাসঙ্গিকতার জন্য চরম ক্ষতিকর হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ সংস্কারের দীর্ঘদিনের যে চাওয়া, তা ইতিমধ্যে অনেকখানি গতি পেয়েছে বলেও জানান তিনি।

আজ শনিবার রংপুরের গ্র্যান্ড প্যালেস হোটেলের কনফারেন্স কক্ষে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) যৌথ উদ্যোগে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।


প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘বিচার বিভাগ হলো রাষ্ট্রের একমাত্র অঙ্গ, যা বহু দশক ধরে নিজের অভ্যন্তরীণ সংস্কারের জন্য সক্রিয়ভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এই দাবির কেন্দ্রে রয়েছে নিজেদের সংস্কার কর্মসূচি নিজেরাই নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব। গত আট মাসে এই প্রচেষ্টা অভূতপূর্ব গতি অর্জন করেছে। এখন লক্ষ্য হলো সেই উদ্দেশ্য পূরণ করা এবং তা যেন ভবিষ্যতেও টিকে থাকে তা নিশ্চিত করা। একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে, আমরা কখনো ক্ষমতার পূর্ণ পৃথক্‌করণের লক্ষ্যের এতটা কাছাকাছি আসিনি। যদি এই সুযোগ কোনোভাবে নষ্ট হয়, তবে তা বিচার বিভাগের মর্যাদা, অখণ্ডতা এবং প্রাসঙ্গিকতার জন্য চরম ক্ষতিকর হবে।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। পৃথক সচিবালয়-বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। প্রস্তাবিত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় বিচারিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ ও অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।’

বিচার বিভাগ সংস্কারকে অর্থবহ ও ফলপ্রসূ করার জন্য তিনি দেশের সকল পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ‘দায়িত্ব গ্রহণের’ আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আধুনিক বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধান বিচারপতি।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন—হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমেদ। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন—ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন—বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক।

সেমিনারে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলায় কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা অংশ নেন। এ ছাড়া রংপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সরকারি কৌঁসুলিসহ অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন।

স্বাগত বক্তব্যে ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রীকরণে প্রধান বিচারপতির ঘোষিত রোডম্যাপকে যুগোপযোগী পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

এর আগে গতকাল শুক্রবার ৫ দিনের সফরে রংপুরে আসেন প্রধান বিচারপতি। তিনি আগামী ৮ এপ্রিল রংপুর ত্যাগ করবেন।

এই সম্পর্কিত আরো