প্রশ্ন: আমার এক মেয়ে আমাদের কথার অবাধ্য হয়ে একটি ছেলেকে বিয়ে করে তার সঙ্গে চলে গেছে। বর্তমানে আমাদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। আমার প্রশ্ন হল- (ক) পিতামাতার এ ধরনের অবাধ্য সন্তান পিতামাতার সম্পত্তি থেকে মিরাস পাবে কি না? (খ) পিতামাতার জন্য তাকে মিরাস থেকে বঞ্চিত করা বৈধ হবে কি?
উত্তর: কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিকে মিরাস বলে। মৃত্যুর পর ওই সম্পত্তি তার জীবিত ওয়ারিশদের মাঝে বণ্টন হবে। এটি শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত বিধান। মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে ওই সম্পত্তিতে জীবিত সকল ওয়ারিশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।
জীবদ্দশায় সে কোনো ওয়ারিশের উপর অসন্তুষ্ট থাকলে বা তাকে সম্পত্তি না দেওয়ার কথা বলে গেলেও এ কারণে কোনো ওয়ারিশ মিরাস থেকে বঞ্চিত হয় না। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পিতামাতা জীবদ্দশায় ওই সন্তানের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে মিরাস থেকে বঞ্চিত ঘোষণা করলেও সে মিরাস থেকে বঞ্চিত হবে না এবং অন্যান্য ওয়ারিশদের জন্য তাকে বঞ্চিত করাও জায়েজ হবে না।
মহান আল্লাহ কুরআন মাজিদে সুরা নিসার ১১-১২ ও ১৭৬ নম্বর আয়াতে মিরাস বণ্টনের নিয়ম-নীতি বর্ণনা করেছেন।
যে এই নীতি বাস্তবায়ন করবে তার জন্য আছে জান্নাত এবং যে তালবাহানা ও কৌশল অবলম্বন করে এ বণ্টনে কমবেশি করবে তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ‘এগুলো হলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করবে, তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত হয়। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।
আর এটাই হলো মহা সফলতা।
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের অবাধ্যতা করবে এবং তার সীমা অতিক্রম করবে, তিনি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে চিরদিন থাকবে। আর তার জন্য আছে অপমানজনক শাস্তি।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১৩-১৪)
মিরাস আল্লাহর বণ্টনকৃত নিয়মে ব্যক্তির ন্যায্যপ্রাপ্য।
এটা ব্যক্তির হক। ব্যক্তির হক নষ্টের জন্য ব্যক্তির কাছ থেকেই ক্ষমা নিতে হবে। যদি কেউ ব্যক্তির হক নষ্ট করে মৃত্যুবরণ করে তাহলে কিয়ামতের দিন নিজের পুণ্য দিয়ে বা তার পাপ গ্রহণ করে তা পরিশোধ করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা অন্যায়ভাবে পরস্পরের সম্পদ ভক্ষণ কোরো না এবং অন্যের সম্পদ গর্হিত পন্থায় গ্রাস করার উদ্দেশ্যে তোমরা জেনেশুনে তা বিচারকদের কাছে পেশ কোরো না।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৮৮)