শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘে মোদির অনুপস্থিতি কোন বার্তা দিচ্ছে?

নিউইয়র্কে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন। বৈশ্বিক এই গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যাচ্ছেন না। তার পরিবর্তে প্রতিনিধি হয়ে যাচ্ছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি-ই মোদির হয়ে বক্তব্য রাখবেন।


প্রশ্ন উঠছে, কেন মোদি এমন সময়ে জাতিসংঘের মতো গুরুত্বপূর্ণ সভায় যাচ্ছেন না? আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ভারত এখন ক্রমবর্ধমান শক্তি, সে অবস্থায় এই অনুপস্থিতি নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।


বিশ্লেষকদের মতে, মোদির এই সিদ্ধান্তের পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কর্মব্যস্ততা। অর্থনীতি ও নির্বাচনী প্রস্তুতি এখন মোদির অগ্রাধিকারে। দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক ফোরামে ভারতের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়েছে। তাই দিল্লি হয়তো মনে করছে জাতিসংঘে না গেলেও প্রভাব খাটানো সম্ভব।


ভারতের পররাষ্ট্রনীতি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বহুপাক্ষিক থেকে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক জোটে বেশি ঝুঁকছে। জি২০, ব্রিকস, কোয়াড—এসব জায়গায় ভারতের উপস্থিতি স্পষ্ট। এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, রাশিয়া, জাপান—সব দেশেই দিল্লির সক্রিয় কূটনীতি চলছে। ফলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উপস্থিতিকে দিল্লি হয়তো প্রতীকী মনে করছে।


তবে সমালোচকরা বলছেন, মোদির এই অনুপস্থিতি পাকিস্তানের মতো দেশের জন্য বাড়তি সুযোগ তৈরি করবে। কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান সব সময় জাতিসংঘকে ব্যবহার করে। মোদির অনুপস্থিতিতে ভারতের বক্তব্য হয়তো ততটা গুরুত্ব পাবে না। জয়শঙ্কর অভিজ্ঞ হলেও, তিনি প্রধানমন্ত্রীর সমতুল্য নন।


আরেক দৃষ্টিতে, এটি ভারতের আত্মবিশ্বাসী অবস্থানকেও তুলে ধরছে। মোদি হয়তো বোঝাতে চাইছেন, ভারতের কণ্ঠ এখন বহুস্তরীয় কূটনীতির মাধ্যমে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। শুধু জাতিসংঘের মঞ্চই নয়, ভারত এখন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক জোটের মধ্য দিয়েই বেশি প্রভাব বিস্তার করছে।


সব মিলিয়ে বলা যায়, মোদির অনুপস্থিতি একদিকে দিল্লির নতুন কূটনৈতিক অগ্রাধিকারকে ইঙ্গিত করছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে প্রতীকী শূন্যতাও তৈরি করছে। ভারত কিভাবে এই ভারসাম্য রক্ষা করবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।

এই সম্পর্কিত আরো