যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের জন্য শপথ নেবেন আগামী ২০ জানুয়ারি। তবে অভিষেকের ১০ দিন আগেই তাকে আদালতের মুখোমুখি হতে হবে। ‘হাশ মানি’ বা ঘুষ কেলেঙ্কারি মামলার সাজার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ১০ জানুয়ারি।
শুক্রবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের আদালতে এ শুনানি হবে বলে আদেশ দিয়েছেন বিচারক হুয়ান মার্শান।
দেশটির পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে ২০০৬ সালের যৌন সম্পর্কের বিষয়ে মুখ না খুলতে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তাকে বিশাল অঙ্কের অর্থ ঘুষ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। আর এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং তাতে দোষীও সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি।
সাধারণত এ ধরনের মামলায় চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও ট্রাম্পকে কারাদণ্ড বা আর্থিক জরিমানা করা হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিচারক। তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হবে। এ রায়ের ফলে ট্রাম্পই হবেন আমেরিকার প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট, যিনি ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। বিচারক মার্শান বলেছেন, অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়া নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ১০ জানুয়ারি সশরীরে বা ভার্চুয়ালি সাজা ঘোষণার সময় আদালতে হাজির হতে পারবেন।
ad
গত জুলাই মাসেই এ মামলার সাজা ঘোষণার কথা ছিল। এর আগে দীর্ঘদিনের শুনানি শেষে জুরি সদস্যরা তাদের রায়ে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করেন। তবে নির্বাচন ও সুপ্রিম কোর্টের ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ইমিউনিটি’র রায়ে এ মামলার সব কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়।
প্রথম ফৌজদারি অপরাধে দোষী সব্যস্ত হওয়া ব্যক্তি হিসেবে ট্রাম্প ৫ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করেন এবং বিজয়ী হন। এরপর তার আইনজীবীরা এ মামলা প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেন। তবে বিচারক তা খারিজ করে তার আগের রায় বহাল রাখেন।
ম্যানহাটনের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সাজা ঘোষণার বিষয়ে মত দিলেও নিজের সিদ্ধান্ত জানাননি বিচারক মার্শানকে।
বিচারক মার্শান তার রায়ে জানিয়েছেন, ট্রাম্পের জয়ের পর তার আইনজীবীদের বক্তব্য উত্তেজনাকে ছাড়িয়ে বরং বিপজ্জনকভাবে তাদের সীমারেখা অতিক্রমের চেষ্টা করেছেন। তারা আবেদনে এমন সব ভাষা ব্যবহার করেছেন, যার কোনো স্থান আদালতে নেই। আবেদন খারিজের আবেদনপত্রে আইনজীবীরা আদালতকে অসংখ্যবার ‘বেআইনি’ ও ‘অসাংবিধানিক’ আচরণে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদন তুলে ধরে বিচারক বলেছেন, নির্বাচিত নেতারা বিচার বিভাগকে বারবার করে দুর্বল প্রমাণের চেষ্টা করেছেন।
বিচারকের তীব্র নিন্দা ও সতর্কতা সত্ত্বেও ট্রাম্পের মুখপাত্র স্টিভেন চুং এটাকে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন। এ মামলা থেকে ট্রাম্প মুক্তি পেলেও অপরাধী হিসেবে তার রেকর্ড থেকে যাবে দেশটির আদালতের নথিতে। আর একজন দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি হিসেবেই হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করবেন ৭৮ বছর বয়সি ট্রাম্প।