ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেওয়া শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কটাক্ষ করেছেন নয়া দিল্লিতে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত সু ফেইহং।
বৃহস্পতিবার এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, গুণ্ডাকে এক ইঞ্চি ছাড় দাও, সে এক মাইল নিয়ে নেবে।
ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে মন্তব্যের সঙ্গে পোস্টে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র একটি মন্তব্যও জুড়ে দিয়েছেন তিনি।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভার প্রধান উপদেষ্টা সেলসো আমোরিমের সঙ্গে বুধবারের ফোনালাপে করা ওই মন্তব্যে ওয়াং ই বলেছিলেন, অন্য দেশকে দমনে শুল্ককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন, ডব্লিউটিওর নিয়মে ভঙ্গ করে, এটি অজনপ্রিয় এবং মোটেই টেকসই নয়।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর ট্রাম্পের দলের সঙ্গে যেসব দেশ প্রথমেই বাণিজ্য চু্ক্তি করে ফেলতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছিল, ভারত ছিল তার একটি। কিন্তু ভারত কৃষি ও দুগ্ধ খাত মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য উন্মুক্ত এবং রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে রাজি না হওয়ায় ৫ দফার আলোচনাতেও নয়া দিল্লি ও ওয়াশিংটন কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি।
ট্রাম্প প্রথমে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান; পরে রাশিয়ার তেল কেনা অব্যাহত রাখায় তার সঙ্গে আরও ২৫ শতাংশ জুড়ে দেন।
প্রথম ২৫ শতাংশ শুল্ক বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হয়েছে। পরবর্তী ২৫% কার্যকর হবে ২৭ আগস্ট থেকে।
রাশিয়ার তেল কেনা অব্যাহত রাখায় ট্রাম্প ভারতের পর চীনের শুল্ক বাড়ানোরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, হতে পারে, আমি জানি না। আমি এখনই বলতে পারছি না। আমরা ভারতকে দিয়েছি, সম্ভবত আরও কয়েকটি দেশকে দিতে যাচ্ছি, তার মধ্যে চীনও থাকতে পারে।
রাশিয়ার তেলের সর্ববৃহৎ আমদানিকারক তিন দেশ হচ্ছে- ভারত, চীন ও তুরস্ক। শুক্রবারের মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না থামলে ট্রাম্প ‘পরোক্ষ শুল্ক’ দেওয়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন।
চলতি বছরের শুরুর দিকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক যুদ্ধ একবার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে ওয়াশিংটন চীনা পণ্যে ১৪৫% শুল্ক বসিয়েছিল। এর পাল্টায় চীনও মার্কিন পণ্যে ১২৫% শুল্ক আরোপ করে বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্র যদি শুল্ক আরও বাড়ায় তাহলে অর্থনৈতিকভাবে তা অর্থহীন হবে এবং শেষ পর্যন্ত বিশ্ব বাণিজ্যের ইতিহাসে তা হাস্যকর বলে গণ্য হবে।
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি করতে বছরের শেষ দিকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা আছে বলে ট্রাম্প কিছুদিন আগেই জানিয়েছেন।
সাংহাই কোঅপারেশনের সম্মেলনে যোগ দিতে সামনেই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও চীন যাওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে তার সঙ্গে জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাক্ষাৎ হতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি