টানা কয়েকদিনের উত্তেজনার অবসানে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। এজন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছে তিন ডজনের দেশ, তবে দেশগুলোর নাম জানায়নি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাহাক দার। যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে দু’দেশের সম্মতির ঘোষণার পরই আলোচনায় এসেছে ভারতের স্থগিত করা সিন্ধু নদের পানিবন্টন চুক্তি।
১৯৬০ সালের এই চুক্তি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে সিন্ধু নদ ও এর উপ-নদীগুলোর পনিবণ্টন নিয়ন্ত্রণ করে। গত মাসে কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর মারাত্মক হামলার পর এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে ভারত, যা দুই দেশের মধ্যে সর্বশেষ সংঘাতের সূত্রপাত করে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা সত্ত্বেও ভারত-পাকিস্তানের পানিবন্টন চুক্তি স্থগিত রয়েছে। দু’দেশের চারটি সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
একজন পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তা দ্য গার্ডিয়ান’কে বলেছেন, ইসলামাবাদ বিশ্বপরিমণ্ডলে প্রমাণ করেছে যে, তারা আঘাত এবং পাল্টা আঘাত করতে পারে। ক্ষমতাশালী প্রতিদ্বন্দ্বী কিংবা পারমাণবিক শক্তিধর উভয় ক্ষেত্রেই।
তিনি আরও বলেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় আমরা যা দেখছি তাতে মনে হচ্ছে, নিয়ন্ত্রণ রেখায় ব্যাপক গোলাবর্ষণ, ভারী অস্ত্র, যুদ্ধবিমান ও ড্রোনের ব্যবহার ধীরে ধীরে কমে আসছে। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে এবং দেখতে হবে যুদ্ধবিরতি কতক্ষণ স্থায়ী হয়। আর এর প্রতিক্রিয়া কী হবে।
পারমাণবিক শক্তিধর দেশ দুটি বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তৃত সংলাপেও সম্মত হয়েছে। পাকিস্তানের পক্ষে বলা হয়েছে, এতে পানির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কারণ ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে পানি সম্পর্কিত চুক্তি স্থগিত করেছে, যা এই দেশের জীবিকা ও কৃষিকে ব্যাপক প্রভাবিত করে।
কিন্তু পানিবন্টন চুক্তি স্থগিতের বিষয়ে কোনো আলোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে ভারত। ফলে সিন্ধু নদের পানি চুক্তি নিয়ে যে সহসাই সংকট কাটবে না, তা সহজেই অনুমেয়।
ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় বলছে, ‘অন্য কোনো স্থানে অন্য কোনো বিষয়ে আলোচনা করার কোনো সিদ্ধান্ত নেই।’ যদিও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তান সরকার ‘একটি নিরপেক্ষ স্থানে বিস্তৃত বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করতে’ সম্মত হয়েছে। তার এই ঘোষণার পরই প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত।
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের উত্তেজনা শুরু হয়েছিল গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলা নিয়ে। এরপর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে শায়েস্তা করছে আটঘাট বেঁধে নামে ভারত। যার মধ্যে অন্যতম হলো ১৯৬০ সালের সিন্ধু নদের পানিবন্টন চুক্তি স্থগিত করা। এছাড়াও একাধিক নদীর পানিপ্রবাহ রোধ করে ভারত। ফলে এর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় পাকিস্তান।