পাকিস্তান দৃঢ়ভাবে বলেছে, সিন্ধু নদের ন্যায্য হিস্যার একবিন্দু পানিও ছাড়বে না। একতরফাভাবে সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলেও দাবি করেছে দেশটি। ইসলামাবাদ ভারতকে ‘জেদি বাচ্চা’ আখ্যা দিয়ে দেশটির লাগাম টেনে ধরতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ভারতের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের ঘোর লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, পাকিস্তান তার ন্যায্য হিস্যার এক ফোঁটা পানিও ছাড় দেবে না।
দার বলেছেন, একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিত বা বাতিল করার কোনো অধিকার ভারতের নেই। তিনি চুক্তির অধীনে পাকিস্তানের অধিকার রক্ষায় তাঁর দেশের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি নিশ্চিত করেছেন, গত ২৯-৩০ এপ্রিল রাতে পাকিস্তান সফলভাবে ভারতের একটি অপতৎপরতা বানচাল করে দিয়েছে। এটি ইসলামাবাদের প্রস্তুতি ও আঞ্চলিক শান্তির প্রতিশ্রুতির ওপরই আলোকপাত করে।
ইসহাক দার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করেছেন, পাকিস্তান অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়াবে না। তিনি দেশটির শান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। গতকাল রোববার ইসলামাবাদে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আপনাদের অন্য পক্ষে (ভারতকে নিয়ে) কাজ করতে হবে, আমাদের নিয়ে চিন্তা করবেন না। আমি আপনাদের কথা দিয়েছি। আমরা সংযম বজায় রাখব।’
ইসহাক দার দৃঢ়ভাবে পেহেলগাম ঘটনার সঙ্গে কোনো পাকিস্তানি জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। এটিকে ভারতের সাজানো নাটক বলে অভিহিত করে বলেছেন, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানিয়েছে, তারা আর শত্রুতা বাড়াবে না এবং ভারতের উসকানি সত্ত্বেও সংযম দেখাতে থাকবে।
এদিকে পাকিস্তানের পরিকল্পনা ও উন্নয়নবিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আহসান ইকবাল সাম্প্রতিক পেহেলগাম ঘটনায় ভারতের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করেছেন। তিনি নয়াদিল্লির আচরণকে ‘জেদি বাচ্চার’ সঙ্গে তুলনা করেছেন।
ইকবাল প্রশ্ন তোলেন, ভারতীয় জম্মু-কাশ্মীরে ১০ লাখ সেনা মোতায়েন থাকার পরও কীভাবে এমন হামলা হতে পারে। তিনি ইঙ্গিত দেন, এই ঘটনার পেছনে ‘অন্য কোনো নাটক’ থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, এমনকি ভারতীয় ভাষ্যকারেরাও স্বীকার করেছেন, এই হামলা একটি বড় ধরনের নিরাপত্তা ব্যর্থতা ছিল।
নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী পাকিস্তানের শান্তির আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করেন। তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দ্বিগুণ শক্তি দিয়ে দেওয়া হবে। তিনি ঘোষণা করেন, ‘যদি ভারত পাকিস্তানের দিকে কুনজর দেয়, তবে তারা এমন জবাব পাবে যা তারা চিরদিন মনে রাখবে।’