✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা ইরানের

গাজাবাসীকে জর্ডান ও মিশরে পাঠিয়ে দেয়ার যে প্রস্তাব করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প, তার তীব্র নিন্দা করেছে ইরান। তারা বলেছে, এটাকে জাতিনিধনের পর্যায়ে বলে ধরা যেতে পারে। একই কথা বলেছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। এ জন্য তারা ফিলিস্তিনিদের অধিকার নিশ্চিত করতে তাদের পাশে দাঁড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এ খবর দিয়ে অনলাইন গার্ডিয়ান বলছে, প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণে ওয়াশিংটন সফরে রয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দফার আলোচনা সোমবার শুরুর কথা রয়েছে।

নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে যাত্রার আগে সাংবাদিকদের বলেছেন, এই সফরে তিনি হামাসের বিরুদ্ধে জয়ের বিষয়ে আলোচনা করবেন। তবে প্রাকটিক্যাল অর্থে এই বিজয় সম্পর্কে বিস্তারিত বলেননি। মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা। এ সময় ইরানকে মোকাবিলা এবং হামাসের হাতে থাকা সব জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। ২০শে জানুয়ারিতে শপথ নিয়ে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর এটাই হতে যাচ্ছে বিদেশি কোনো নেতার সঙ্গে তার প্রথম বৈঠক। বিমানে উঠার আগে নেতানিয়াহু বলেন, এই সফর হলো ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের জোটের শক্তির প্রমাণ। তাকে রোববার রাতে ওয়াশিংটনে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘে ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ডেনন। এই দূত বলেন, এই সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মিত্রতা আরো গাঢ় হবে। সহযোগিতা আরো বৃদ্ধি পাবে। ওদিকে নেতানিয়াহুর অফিস থেকে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় দফা নিয়ে সোমবার ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকোফের সঙ্গে আলোচনা করার কথা নেতানিয়াহুর। উল্লেখ্য, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে ৪২ দিনের প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি শেষ হবে আগামী মাসে। পরবর্তী পর্যায়ে বাকি সব জিম্মিকে মুক্তি দেয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত আছে গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ আরো স্থায়ীভাবে বন্ধে আলোচনা। ওদিকে গাজা উপত্যকা থেকে গাজাবাসীকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পাঠিয়ে দেয়ার যে প্রস্তাব করেছেন ট্রাম্প তার কড়া নিন্দা জানিয়েছে ইরান। তারা সতর্ক করে বলেছে, ট্রাম্পের এই উদ্দেশ্যকে জাতি নিধন হিসেবে দেখা যায়। 

বার্তা সংস্থা এএফপি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাইয়িকে উদ্ধৃত করে বলেছে, আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ফিলিস্তিনিদের অধিকার নিশ্চিত করতে তাদেরকে সহায়তা করা উচিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ট্রাম্প যে ঘোষণা দিয়েছেন তার উদ্ধৃতি দিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। ট্রাম্প ওই সময় প্রস্তাব করেছেন, পুরো গাজা উপত্যকাকে পরিষ্কার করার জন্য বিপুল পরিমাণ ফিলিস্তিনির গাজা ছেড়ে যাওয়া উচিত। এসব ফিলিস্তিনিকে প্রতিবেশী জর্ডান ও মিশরের মতো দেশগুলোর আশ্রয় দেয়া উচিত। সেটা হতে পারে অস্থায়ী অথবা দীর্ঘমেয়াদের জন্য। ট্রাম্পের এই প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ, হামাস ও এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মিত্র। এমনিতেই জর্ডানে বর্তমানে অবস্থান করছেন বহু লাখ ফিলিস্তিনি। কয়েক লাখ বসবাস করছেন মিশরে। গাজাবাসীকে তাদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার যে ধারণা দিয়েছেন ট্রাম্প তা প্রত্যাখ্যান করেছে জর্ডান, মিশর ও আরবের অনেক দেশ। 

ওদিকে বার্তা সংস্থা ওয়াফা বলেছে, টানা ১৪ দিনের মতো পশ্চিমতীরের শহর জেনিনে অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এ হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৫ ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে বহু ঘরবাড়ি। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, জেনিনে রোববার ধ্বংস করা হয়েছে ২৩টি ভবন। সেখানে ‘সন্ত্রাসীদের অবকাঠামো’ পুনর্গঠন প্রতিরোধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জেনিন ক্যাম্প ও আল হাদাফে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মেয়র মোহাম্মদ জারার।

এই সম্পর্কিত আরো