✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
আন্তর্জাতিক

প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরব গেলেন সিরিয়ার নতুন নেতা

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাআ আজ রোববার সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার নতুন নেতা হিসেবে এটিই তাঁর প্রথম বিদেশ সফর বলে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি সহ সফররত শারাআকে সৌদি কর্মকর্তারা অভ্যর্থনা জানান। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম আল-ইখবারিয়া তাঁদের আগমনের ভিডিও প্রকাশ করেছে।


সম্প্রচার মাধ্যমটি জানিয়েছে, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে শারাআর। তবে এই সাক্ষাৎ কখন অনুষ্ঠিত হবে, সেই সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো সময় উল্লেখ করা হয়নি।

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, রিয়াদে মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করবেন শারাআ ও শাইবানি। এই মাধ্যমটিও সাক্ষাতের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

এদিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্যালয় এক্স মাধ্যমে একটি ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিতে দেখা যায়, শারাআ ও শাইবানিকে একটি ব্যক্তিগত বিমানে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন। এটিকে তাঁদের ‘প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই পোস্টে।

গত ডিসেম্বর মাসে আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন শারাআ। তাঁর নেতৃত্বেই বিদ্রোহীরা মাত্র ১০ দিনের এক অভিযানে বাশারের পতন ঘটিয়েছিল। সৌদি বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান শারাআর নিয়োগকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন।

সিরিয়ার নতুন প্রশাসন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পুনর্গঠন ও অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের জন্য ধনী উপসাগরীয় দেশগুলোর সহায়তার ওপর নির্ভর করছে। গত ডিসেম্বরে সৌদি চ্যানেল আল-আরাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শারাআ জানান, সৌদি আরব নিশ্চিতভাবেই সিরিয়ার পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং দেশটির জন্য এটি বিনিয়োগের দারুণ সুযোগ।

তিনি আরও জানান, তাঁর জন্ম সৌদি আরবে। সেখানেই কাজ করতেন তাঁর বাবা। জীবনের প্রথম সাত বছর সৌদি আরবেই কেটেছে তাঁর।

আল-আহরাম সেন্টার ফর পলিটিক্যাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের বিশ্লেষক রাবহা সাইফ আল্লাম মনে করেন, সৌদি আরব নতুন সিরিয়াকে আরব বিশ্বের সঙ্গে পুনরায় সংযুক্ত করতে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সৌদি আরব সিরিয়ার স্থিতিশীলতা থেকে সরাসরি উপকৃত হবে বলেও মত দেন তিনি।

সাইফ বলেন, ‘সিরিয়াকে ইরানের প্রভাব থেকে দূরে সরিয়ে রাখা সৌদি আরবের জন্য একটি কৌশলগত সুবিধা।’

বর্তমানে সিরিয়া তাদের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা কাটানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়াকে ‘সন্ত্রাসের মদদদাতা রাষ্ট্র’ হিসেবে চিহ্নিত করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। পরে ২০১১ সালে আসাদ সরকারবিরোধী আন্দোলনে দমন-পীড়নের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করা হয়।

সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান গত মাসেই সিরিয়ায় সফর করেছিলেন। সে সময় তিনি সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন। প্রিন্স ফয়সাল বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে সক্রিয় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং ইতিবাচক বার্তা পাচ্ছি।’

আসাদের পতনের পর থেকেই সিরিয়ার নতুন সরকার একের পর এক কূটনৈতিক বৈঠক করছে। এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি দামেস্ক সফর করেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি। তিনি সিরিয়ার স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ও দেশটির উন্নয়ন এবং পুনর্গঠন প্রকল্প এগিয়ে নিতে একটি প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

এই সম্পর্কিত আরো