শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
‘জয় বাংলা’ স্লোগানে টিকটক বানাতে গিয়ে আটক ১২ যুবক দাদার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত মাইলস্টোনের আয়মান দোয়ারাবাজারে বিদেশি মদসহ কারবারি আটক সিলেটে এসে সিলেট নিয়ে যা বললেন নাহিদ ইসলাম উমাইরগাঁওয়ে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা তৃণমূল পর্যায়ে এনসিপিকে শক্তিশালী করতে হবে- হাসনাত আবদুল্লাহ কুলাউড়ায় এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থী ও প্রবাসীদের সংবর্ধনা জামালগঞ্জে সাজাপ্রাপ্ত আসামী ধরতে পুলিশের উপর হামলা, গ্রেপ্তার ৩ বিশ্বনাথে ‘রাব্বানী ফাউন্ডেশন’র উদ্যোগে চার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধিত ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য রাষ্ট্রের ফিটনেস তৈরি করতে হবে- নাহিদ ইসলাম
advertisement
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলি আগ্রাসনে অনাথ গাজার ৩৮ হাজার শিশু, শিক্ষাবঞ্চিত ৭ লাখ

যুদ্ধ শেষ হলেও গাজার আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। যুদ্ধের ১৫ মাসে প্রতিদিন হাজার হাজার পরিবার তাদের প্রিয়জন হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। যুদ্ধের ভয়াবহতার মধ্যে মানবিক ক্ষয়ক্ষতির ক্ষত ফুটে না উঠলেও যুদ্ধ শেষে ইসরায়েলি হামলার দগদগে ক্ষত নতুন করে উদ্ভাসিত হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ কেবল গাজার শিশুদের শারীরিক ক্ষতিই করেনি, বরং তাদের মনেও গভীর আঘাত হেনেছে।


গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় ৩৮ হাজারের বেশি শিশু অনাথ, তারা এখন একা। তাদের চোখে, মনে প্রতিটি দিন যেন এক নতুন বিভীষিকা। একেকটি শিশু, যারা কিছুদিন আগ পর্যন্ত মা-বাবার আদর-ভালোবাসায় বেড়ে উঠছিল, আজ তাদের মুখে শুধু শূন্যতা, দুঃখ এবং ভয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জাহের আল-ওয়াহিদি বলেন, প্রায় ৩২ হাজার ১৫১ শিশু তাদের বাবা হারিয়েছে, ৪ হাজার ৪১৭ শিশু মা হারিয়েছে, আর ১ হাজার ৯১৮ শিশু বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে। তারা এখন তীব্র শূন্যতা আর একাকিত্বের মধ্যে জীবন কাটাচ্ছে।

গাজার শিক্ষা ব্যবস্থা আগে ফিলিস্তিনিদের আশা এবং উন্নতির প্রতীক এক আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচিত হলেও এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের রিলিফ এজেন্সি ইউএনআরডব্লিউএ জানাচ্ছে, প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার শিশু এখন স্কুলে যেতে পারছে না, আর ১৪ হাজার ৫০০ শিশুর জীবনযুদ্ধ চিরতরে থেমে গেছে। ভবিষ্যতের সঞ্চয়, আশার আলো সবকিছুই এখন অস্পষ্ট হয়ে পড়েছে।

গাজার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, প্রায় ১৫ হাজার শিশুর মৃত্যু অথবা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার তথ্য। এই বিষয়টি শিশুদের পরিবারগুলোর জন্য এক চরম কষ্টের বাস্তবতা। গাজার ৯৫ শতাংশ স্কুলে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এর ফলে প্রায় ৮৫ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়েছে। একে একে ধ্বংস হয়েছে ১৪০টি একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন। শিক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি বিপর্যস্ত।

তবে সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা হলো মানসিক। গাজার শিশুদের মধ্যে এক ভয়ংকর মানসিক সংকট তৈরি হয়েছে। ইউনিসেফ জানিয়েছে, গাজার প্রায় ১১ লাখ শিশু এখন দুঃস্বপ্ন, ভয় এবং আতঙ্কের মধ্যে বেঁচে রয়েছে। তাদের মনে পাথরের মতো চাপ, প্রতি মুহূর্তে মনে হয় তাদের মৃত্যু আসছে। প্রায় ৯৬ শতাংশ শিশু মনে করে, তাদের মৃত্যু অনিবার্য। এর মধ্যে অনেক শিশু মৃত্যু কামনা করছে, যেন এই দুঃস্বপ্নের জীবনের থেকে মুক্তি পায়।

এই অবস্থা শুধু গাজার যুদ্ধের ফলস্বরূপ নয়, এটি একটি নতুন প্রজন্মের জন্য এক দীর্ঘমেয়াদি মানসিক আঘাতের সূচনা। মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই শিশুদের যন্ত্রণা আগামী প্রজন্ম পর্যন্ত অনুভূত হবে। যুদ্ধের ক্ষতি শুধু শারীরিক নয়, এটি শিশুদের মনের গভীর কোণে এমন দাগ রেখে যাচ্ছে, যা কখনো মুছে ফেলা সম্ভব নয়।

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, গাজার এই অবস্থা মানবিকতার প্রতি এক কঠিন প্রশ্ন তুলে ধরে। মানবতা কি এখনো জীবিত? যদি হয়, তবে আমাদের কি কোনো দায়িত্ব নেই এই শিশুদের প্রতি? আমাদের অবিলম্বে এগিয়ে আসতে হবে তাদের ক্ষতিপূরণের জন্য, তাদের চোখে একটি নতুন আশা এবং ভবিষ্যতের আলোর রেখা তৈরি করার জন্য। পৃথিবী আর একদিনও যেন এমন অন্ধকারের দিকে না চলে যায়, যেখানে একেকটি শিশু শুধু ভয়, আতঙ্ক এবং একাকিত্বের মধ্যে ডুবে থাকে।

এই সম্পর্কিত আরো

‘জয় বাংলা’ স্লোগানে টিকটক বানাতে গিয়ে আটক ১২ যুবক

দাদার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত মাইলস্টোনের আয়মান

দোয়ারাবাজারে বিদেশি মদসহ কারবারি আটক

সিলেটে এসে সিলেট নিয়ে যা বললেন নাহিদ ইসলাম

উমাইরগাঁওয়ে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা

তৃণমূল পর্যায়ে এনসিপিকে শক্তিশালী করতে হবে- হাসনাত আবদুল্লাহ

কুলাউড়ায় এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থী ও প্রবাসীদের সংবর্ধনা

জামালগঞ্জে সাজাপ্রাপ্ত আসামী ধরতে পুলিশের উপর হামলা, গ্রেপ্তার ৩

বিশ্বনাথে ‘রাব্বানী ফাউন্ডেশন’র উদ্যোগে চার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধিত

ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য রাষ্ট্রের ফিটনেস তৈরি করতে হবে- নাহিদ ইসলাম