লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস, লিবিয়া স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এ প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় ত্রিপোলির তাজুরা ডিটেনশন সেন্টার থেকে মোট ১৭৩ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আইওএম-এর সহায়তায় দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। বুরাক এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে আগামীকাল সোমবার (১ ডিসেম্বর) আনুমানিক সকাল ৭টায় তারা ঢাকায় পৌঁছাবেন বলে জানিয়েছে ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস।
লিবিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার লিবিয়ার অভিবাসন অধিদফতরের অভ্যর্থনা সেন্টারে উপস্থিত থেকে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম তদারকি করেন এবং প্রত্যাবাসিত বাংলাদেশিদের বিদায় জানান। এ সময় লিবিয়ার অভিবাসন অধিদফতরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এবং দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রদূত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার জন্য লিবিয়ার অভিবাসন অধিদফতর, সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং আইওএম-এর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অভিবাসীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আপনারা আল্লাহর অশেষ রহমতে ও সৌভাগ্যের কারণে একটি বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছেন। ভূমধ্যসাগরের প্রাণঘাতী পথ থেকে বেঁচে ফিরতে পারা নিঃসন্দেহে দ্বিতীয় জীবনের মতো। ফলে দেশে ফিরে নতুনভাবে জীবন শুরু করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ পথে বিদেশ গমন কখনোই নিরাপদ নয়। এ পথে শুধু জীবন নয়, সম্মান, সময় ও অর্থ—সব কিছুই ঝুঁকির মুখে পড়ে। তাই বৈধ পথ, দক্ষতা উন্নয়ন এবং নিরাপদ অভিবাসনই একমাত্র গ্রহণযোগ্য উপায়।’
রাষ্ট্রদূত প্রত্যাবাসিতদের দেশে ফিরে মানবপাচার ও অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। দূতাবাস ভবিষ্যতেও অভিবাসীদের পাশে থাকবে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে বলে জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূত প্রত্যেককে দেশে ফিরে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সরকারের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ সুবিধা গ্রহণ করে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রচেষ্টা চালানোর অনুরোধ করেন।