জাতীয় নির্বাচন দ্রুত করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর তাড়া থাকলেও ঢাকার বাইরের মানুষ স্থানীয় নির্বাচন করার ওপরও গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ।
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, “বিশেষ করে ঢাকার বাইরে যখন যাচ্ছি মানুষের কাছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রায়োরিটি হয়ে যাচ্ছে।… স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যেও একই রকম মতামত আসছে। তার দল ন্যাশনাল লেভেলে একটা কথা বললেও ওরা লোকাল লেভেলে কিন্তু ওই লোকাল নির্বাচনটা চাচ্ছেন।”
রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার যে ১১টি কমিশন গঠন করেছে, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন তারই একটি। গঠনের পর ৯০ দিন, অর্থাৎ ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ইতোমধ্যে জেলা পর্যায়েও মত বিনিময় করেছেন কমিশনের সদস্যরা।
এ ধারাবাহিকতায় সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের (এনআইএলজি) সম্মেলন কক্ষে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, “যেসব পলিটিক্যাল পার্টির নির্বাচন নিয়ে হাইপ রয়েছে, ইমেডিয়েট ইলেকশন চাচ্ছে; তাদের লোকাল লিডারদের আমরা যখন ডেকেছি, তারা কিন্তু দুটোই চায়। দুটো নির্বাচনই হোক।“
স্থানীয় নানা শ্রেণি পেশার মানুষের কাছ থেকে পাওয়া মতামত তুলে ধরে তিনি বলেন, “একদল আছে যারা একসাথে (জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন) চায়; কেউ বলে এটা আগে হোক, ওটা পরে হোক। মতভেদ আছে। অনেকে চায় এটা একদিনে করে ফেললে কেমন হয়; এতে খরচও কমে যায়। আরেকদল বলছে আগে স্থানীয়টা করে স্থিতিশীলতা আসবে, তারপর জাতীয় নির্বাচন করেন।
“তবে লোকাল লেভেলে মতামত খুবই কম এখন ইমেডিয়েট জাতীয় নির্বাচন নিয়ে, এটা ঢাকা লেভেলে আছে। ওই লেভেলে পাইনি। এটা আপনাদের ইনফরম করলাম শুধু।”
স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাও স্থানীয় নির্বাচন দ্রুত করার বিষয়ে মতামত দিচ্ছে বলে জানান কমিশন প্রধান।
এর ব্যাখ্যা তুলে ধরে অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, “লোকাল লেভেলের মতামত হচ্ছে, তারা বলতে বলতে চাচ্ছে, এটা একটা শূন্যতার মধ্যে আছি। এটা একটা সেবা পাচ্ছি না; আমরা কার কাছে যাব বুঝতে পারছি না। যার ফলে এখন লোকাল নির্বাচনটা হয়ে যাওয়া উচিত। এটা স্থানীয় লোকদের মতামত।”
পার্বত্য জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সুপারিশ থাকবে
চট্টগ্রামের পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় সরকার কমিশন সুপারিশ রাখবে বলে জানান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ। ইতোমধ্যে ওই তিন জেলায় কমিশন সদস্যরা মতবিনিময়ও করেছেন।
কমিশন প্রধান বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আমাদের এখানে দুঃখজনক হলেও সত্য, অন্য কোনো কমিশন কিন্তু এটা নিয়ে ভাবছে বলে মনে হয় না। জেলা পরিষদের নির্বাচন ১৯৮৯ সালের পরে আর হয়নি।”
তিনি বলেন, “আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে স্পেসিফিক চিন্তা করেছি। মত বিনিময় করা, আইন কানুন পর্যালোচনা করেছি। অনেক সমস্যা সংকুল এলাকা। কী করব- স্পষ্টভাবে কিছু বলতে পারছি না। … জেলা পরিষদ নির্বাচনটা করতে গেলে কী কী বাধা রয়েছে সেটা স্টাডি করছি। অন্তত জেলা পরিষদ নির্বাচনটা যেন সব নির্বাচনের মত হতে পারে।”