রংপুরের হাট-বাজারগুলোতে গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম কেজিতে ৫ টাকা থেকে ৬ টাকা বেড়ে গেছে। চালের এমন ঊর্ধ্বমুখী বাজারদরে স্বল্প আয়ের ও নিম্নবিত্ত পরিবারের ক্রেতা সাধারণ বিপাকে পড়েছেন। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, একদল সিন্ডিকেট চক্র চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
রংপুর সিটি বাজার, মাহিগঞ্জ চালের আড়তসহ জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে খবর নিয়ে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহে চালের বাজারদর হঠাৎ করে মোটা জাতের স্বর্ণা কেজিতে ৫৪ টাকা থেকে ৫৮ টাকা, ২৮ জাতের চাল ৬৬ টাকা থেকে ৭২ টাকা, ২৯ জাতের চাল ৬২ টাকা থেকে ৬৮ টাকা, মিটিকেট নামে এক প্রকার প্রসেস মোটা চাল চিকন চালে রূপান্তর করে বিক্রি হচ্ছে তা ৭৮ টাকা থেকে বেড়ে ৮২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে; যা সাম্প্রতিককালে চালের সর্বোচ্চ বাজারদর বলে চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন।
রংপুর সিটি বাজারের চাল ব্যবসায়ী আব্দুল বাতেন জানান, তিনি গত দুই সপ্তাহে চাল যে দামে বিক্রি করেছেন সেসব চাল এখন গড়ে ৫ টাকা থেকে ৬ টাকা বেশি দরে বিক্রি করছেন; যা গড়ে ২৫ কেজি ওজনের বস্তায় গড়ে দেড়শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
রংপুরের আদি শহর মাহিগঞ্জ চালের আড়তের ব্যবসায়ী আমির হোসেন ও সামসুল আলম বাবু বলেন, চালের বাজারদর একটি সিকেট চক্র নিয়ন্ত্রণ করার কারনে চালের বাজারদর ক্রমাগত উর্ধ্বমুখী হচ্ছে। সরকারের খাদ্য বিভাগের নজরদারির অভাবে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
মাহিগঞ্জ এলাকার অটো রাইস মিলের মালিক লোকমান হোসেন মোল্লা চালের বাজারদর বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হিসেবে বলেন, অনেক ব্যবসায়ী চালের মজুত গড়ে তুলে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করায় চালের দর বৃদ্ধি পেয়েছে। এখনি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে চালের বাজারদর আরও বেড়ে যেতে পারে।
নগরীর কামালকাছনার বাসিন্দা রিকশাচালক রমিজ উদ্দিন ও গুপ্তপাড়ার বাসিন্দা দিনমজুর মজলুম আলী বলেন, রিকশা চালিয়ে যা আয় হয়, তাতে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিত্যদিনের খাবার জোটানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
একই কথা বলেছেন মজলুম আলী। তিনি বলেন, দিনমজুরি করে যে আয় হয় তা থেকে বাড়ির ৫ সদস্যের দুই বেলা চালের জন্য ব্যয় বেড়ে গেছে। চালের বাজারদর বেড়ে যাওয়ায় পরিবারের চাহিদামতো বাজার খরচ করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কেজিপ্রতি চালের দাম গড়ে ৬ টাকা বেড়ে যাওয়ায় তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যদি চালের দাম আরও বেড়ে যায় তা হলে তারা আরও সংকটে পড়বেন। তাই তারা মনে করেন চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।