কক্সবাজারের টেকনাফে সপ্তাহব্যাপী টানা বৃষ্টিতে সেন্টমার্টিনসহ টেকনাফে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন আড়াই হাজার মানুষ। শুধু তাই নয়, বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে প্রায় ৮০টির অধিক গ্রাম।
আর পাহাড় ধসের আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিতে বসবাস করা অধিকাংশ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে টেকনাফ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে।
পানিবন্দি মানুষকে তাৎক্ষণিক উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন।
স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, উপজেলার হ্নীলা, টেকনাফ সদর, পৌরসভা, সাবরাং, সেন্টমার্টিন ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন আড়াই হাজারের অধিক মানুষ। নিজ বাড়িতে থাকতে না পেরে অনেকেই পরিবার-পরিজন ও শিশুসহ উঠেছেন আশ্রয় কেন্দ্রে।
সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় টেকনাফ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে পানিবন্দি মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
ভুক্তভোগী রংগীখালীর মোহাম্মদ হোছন জানান, টানা বৃষ্টিতে গ্রামের প্রায় ৩০০ পরিবার পানিবন্দি। বাড়িঘর এখন পানিতে ডুবে গেছে। আগুন জ্বালিয়ে রান্না পরিবেশটাও নেই। তাই যারা স্লুইসগেট বন্ধ করে রেখেছে বা রাস্তা তৈরি করে পানি যাওয়া পথ বন্ধ করেছে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা মোহাম্মদ আজিম জানান, অতি বৃষ্টিতে আমাদের দ্বীপের কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দ্বীপের চারদিকে প্রচুর বাতাস। কয়েক দিন ধরে নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় কিছুটা খাদ্যসামগ্রী সংকট হওয়ায়, দোকানিরা দামও বাড়িয়েছেন।
টেকনাফ পৌরসভার স্থানীয় শহীদ উল্লাহ জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের পাশে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করা পরিবারগুলোকে উপজেলা মাইমুনা স্কুলে নিয়ে গেছেন। বর্তমানে তারা সেখানে অবস্থান করছেন।
হ্নীলা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আলী জানান, সপ্তাহব্যাপী টানা বৃষ্টি হচ্ছে, তাই বারবার নিম্ন এলাকায় বসবাস করা পরিবারগুলো পানিবন্দি হচ্ছে। তবুও হ্নীলা ইউনিয়নের পক্ষ থেকে যতটুকু পারি পানিবন্দি মানুষকে ত্রাণ ও শুকনো খাবার সহায়তা প্রদান করেছি। এরপরেও যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয় তাহলে তাদের আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে। উপজেলা ও পরিষদের পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, টানা বৃষ্টিতে পানিবন্দি মানুষগুলোকে উপজেলার পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। আর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা পরিবারগুলোকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।