সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সাবেক বিতর্কিত নির্বাহী কর্মকর্তা ও কুমিল্লায় সিনিয়র জেল সুপারকে গ্রেফতারের হুমকি দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। দুই কর্মকর্তার কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
সম্প্রতি ফাঁস হওয়া এক অডিও ক্লিপে শোনা গেছে, একজন সরকারি কর্মকর্তা অন্য কর্মকর্তাকে সরাসরি গ্রেফতারের হুমকি দিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে এমন একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
অডিওতে শোনা যায়, কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ) মো. তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুনকে সরাসরি গ্রেফতারের হুমকি দিচ্ছেন। এ অডিও ফাঁস হওয়ার পর থেকেই প্রশাসনিক শৃঙ্খলা, আচরণবিধি ও ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
অডিওতে আরও শোনা যায়, কুমিল্লার সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুন নির্ধারিত কাগজপত্র সংক্রান্ত বিষয়ে যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন; কিন্তু অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. তৌহিদুল ইসলাম বারবার তার কথার মধ্যে বাধা দেন এবং রাগান্বিত কণ্ঠে বলেন- ‘তুমি বেয়াদবি করছো’। এ সময় আরও বলেন- ‘আমি তোমাকে এখনই গ্রেফতার করতে পারি।’ এ ধরনের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে কুমিল্লার সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুনকে একাধিকবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে তিনি গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, জেলখানার পেছনে আমাদের ডিসি পার্কের কাজ চলছিল। তারা জেলখানা থেকে বেরিয়ে এসে জেল সুপারের নির্দেশে ভেকুওয়ালাকে মারধর করেছে। আমাদের স্টাফ যাওয়ার পর তাকেও মারধর করা হয়। পরে খবর পেয়ে এডিসি এবং এনডিসি ঘটনাস্থলে যান।
তিনি বলেন, এডিসি সাহেব তখন এডিএমের দায়িত্বে ছিলেন। ওনার লোকজনকে নিয়ে এ কথাগুলো বলেছে। তখন জেল সুপার কথাগুলো রেকর্ড করেছেন। এ রেকর্ড বিভিন্ন জায়গায় ভাইরাল করেছেন।
উল্লেখ্য, আলোচিত এই এডিসি মো. তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে গোইয়ানঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাবাস্থায় উপজেলার বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারিতে ৮টি মৌজায় ৯ লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ করে স্থানীয় প্রশাসন। ট্রাস্কফোর্সের নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। অভিযানে পাথর জব্দের বিষয়টি গণমাধ্যমেও প্রকাশিত, প্রচারিত হয়। এছাড়া অভিযানকালে পাথর বহনের দায়ে অসংখ্য ট্রাক ও বারকি নৌকা জব্দ দেখানো হয়।
এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বদলী হওয়ার পূর্বে জব্দকৃত ৭ কোটি টাকা মূল্যের পাথর বিক্রি করে দেন। বিক্রিত পাথরের টাকায় তিনি পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনে বদলি হন বলে জনস্রোতি রয়েছে।