দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ২৮ টি বিভাগ। প্রতিটি বিভাগেই রয়েছে নিজস্ব সমিতি বা সোসাইটি। বিভাগীয় সমিতি ফি এর সাথে প্রবেশপত্রের সম্পর্ক না থাকলেও অনেক বিভাগে তা না দিলে আটকে রাখা হয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার প্রবেশপত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১০টি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন বিভাগ সমিতি ফি হিসেবে প্রতি সেমিস্টারে শিক্ষার্থীদের থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আদায় করে প্রবেশপত্র প্রদান করে। ফি আদায় না করলে প্রবেশপত্র দেয়া হয়না অনেক বিভাগে। ফি না দেয়ায় প্রবেশপত্র আটকে দেয়া একধরনের হয়রানি ও মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে সমিতি ফি জমা দিতে হয় সরাসরি ব্যাংকে, নেই মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা। বিভিন্ন বিভাগে এমন অলিখিত প্রচলিত নিয়ম বন্ধের দাবি জানিয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজিব আহমেদ রবিন বলেন, পরীক্ষার আগে সমিতি ফি ব্যাংকে জমা দিয়ে তা আবার বিভাগে জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া ভোগান্তি আমাদের জন্য। আবার অনেক বিভাগে এই ফি না দিলে প্রবেশপত্র আটকে রাখা হয়। যা মোটেও কাম্য নয়। কারণ, আমরা সেমিস্টার ও ক্রেডিট ফি দিয়ে থাকি যার ভেতর সকল প্রকার ফি অন্তর্ভুক্ত থাকে। তাই প্রবেশপত্র আটকিয়ে রাখার কোনো এখতিয়ার নেই ডিপার্টমেন্টের। যেহেতু সকল বিভাগেই সমিতি রয়েছে এবং সমিতি পরিচালনার জন্য শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে একটা নির্দিষ্ট ফি নেওয়া হয়, তাই এ প্রক্রিয়া আরও সহজ করে ক্লাস প্রতিনিধির মাধ্যমে অথবা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে নিলে সকল শিক্ষার্থীর ভোগান্তি লাঘব হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২ জন শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের উপর সমিতির ফি দেয়ার জন্য বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করতে আমাদের পরীক্ষার প্রবেশপত্র আটকে রাখা হয়, আটকে রাখার হুমকি স্বরূপ নোটিশও দেয়া হয়। সমিতি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মতো হতে পারে, যেখানে যাদের ইচ্ছে স্বেচ্ছায় অনুদান দিবে। কিন্তু এর জন্য নির্ধারিত ফি দিতে বাধ্য করা কখনোই উচিত নয়।
জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম বলেন, “শিক্ষার্থীদের উচিত এই অভিযোগ লিখিত আকারে আমাদের কাছে দেয়া। তাহলে স্থায়ী সমাধান হবে।”
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, ‘সমিতি ফি এর সাথে প্রবেশপত্রের কোনো সম্পর্ক নেই, যে যে বিভাগে সমিতি ফি এর জন্য প্রবেশপত্র আটকানো হচ্ছে সেইসব বিভাগের ডিনদের অবগত করতে হবে।’