ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ১২টি সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ৯টিতেই জয় পেয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের প্রার্থীরা। বাকি ৩টি পদে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন। ফলাফল ঘোষণার পর এ তথ্য জানা যায়।
এবারের ডাকসুতে মোট ২৮টি পদে নির্বাচন হয়। এর মধ্যে ভিপি, জিএস ও এজিএসসহ ১২টি সম্পাদকীয় পদ রয়েছে। বাকি ১৩টি সদস্যপদ ও অন্যান্য পদে লড়াই হয় ভিন্ন ভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে।
চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা গেছে, সম্পাদকীয় পদের ফলাফল বেশ স্পষ্ট। ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্রার্থীরা একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। সম্পাদকীয় পদে নির্বাচিতরা হলেন, সহ-সভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম (ছাত্রশিবির সমর্থিত)। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এস এম ফরহাদ (ছাত্রশিবির সমর্থিত)। সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) মুহা. মহিউদ্দীন খান (ছাত্রশিবির সমর্থিত)। মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ফাতেমা তাসনিম জুমা (ছাত্রশিবির সমর্থিত)। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইকবাল হায়দার (ছাত্রশিবির সমর্থিত)। কমন রুম, রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক উম্মে ছালমা (ছাত্রশিবির সমর্থিত)। আন্তর্জাতিক সম্পাদক জসীমউদ্দিন খান (ছাত্রশিবির সমর্থিত)। ক্রীড়া সম্পাদক আরমান হোসেন (ছাত্রশিবির সমর্থিত)। ছাত্র পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহ (ছাত্রশিবির সমর্থিত)। ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম (ছাত্রশিবির সমর্থিত)। স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এম এম আল মিনহাজ (ছাত্রশিবির সমর্থিত)। মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. জাকারিয়া (ছাত্রশিবির সমর্থিত)।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয় পাওয়া তিনটি পদ হলো— সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ (স্বতন্ত্র)। গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক সানজিদা আহমেদ তন্বি (স্বতন্ত্র)। সমাজসেবা সম্পাদক যুবাইর বিন নেছারী (স্বতন্ত্র)।
এদিকে, শিবির-সমর্থিত প্যানেলের এমন ব্যাপক জয়ের ঘটনায় অনেকে এটিকে ‘ভূমিধস বিজয়’ হিসেবেও আখ্যা দিচ্ছেন। এই নির্বাচনী ফলাফল ডাকসু রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তথ্যানুযায়ী ডাকসুর মোট ভোটার ছিলেন ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী এবারের নির্বাচনে অংশ নেন।
তবে ফলাফলকে ঘিরে এখনও কিছু প্রার্থী এবং সংগঠন আপত্তি ও প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। কেউ কেউ নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ বলছেন, আবার অনেকেই ফলাফল মেনে নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন।