বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাকে তিনটি অঞ্চলে (সবুজ, হলুদ ও লাল) ভাগ করার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেল।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনের বটতলায় আসন্ন ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ঘোষিত ইশতেহারে এই অঙ্গীকার করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেল। এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীবান্ধব নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে মোট ১০ দফা অঙ্গীকার করেছে প্যানেলটি।
সংবাদ সম্মেলনে এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামিমের সঞ্চালনায় ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান ইশতেহারের এসব অঙ্গীকার তুলে ধরেন। এ সময় ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদসহ অন্য প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও যুগোপযোগী, আধুনিক, নিরাপদ ও শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে আমরা ১০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করছি। আমরা বিশ্বাস করি, এই ইশতেহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মতামত প্রতিফলিত হয়েছে। আমরা নির্বাচিত হলে এগুলো বাস্তবায়নে চেষ্টা করব।’
এই ১০ দফা ইশতেহার হলো—১. শিক্ষা ও গবেষণাকে প্রাধান্য দিয়ে আধুনিক, আনন্দময়, বসবাসযোগ্য ও নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলা। ২. নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস, নারী স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ৩. শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্যবিমা নিশ্চিত করা এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা গ্রহণ ও চলাচল সহজতর করা। ৪. কারিকুলাম, অবকাঠামো ও পরীক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং গবেষণার মানোন্নয়ন করা। ৫. পরিবহনব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ, ব্যাটারিচালিত শাটল বাস সার্ভিস প্রচলন এবং যাতায়াতব্যবস্থা সহজ করা। ৬. হয়রানিমুক্ত প্রশাসনিক সেবা, শিক্ষাঋণ ও ক্যাম্পাসভিত্তিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। ৭. তরুণদের গঠনমূলক কাজে সম্পৃক্তকরণ এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করা। ৮. শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল–সুবিধা, সাইবার সিকিউরিটি ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধ করা। ৯. বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ সংরক্ষণ, সবুজায়ন ও প্রাণীবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরি করা। ১০. কার্যকর ডাকসু ও আন্তর্জাতিক পরিসরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা।
ইশতেহারের পঞ্চম দফায় পরিবহনব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ, ব্যাটারিচালিত শাটল বাস সার্ভিস প্রচলন এবং যাতায়াতব্যবস্থা সহজ করা অংশে ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাকে গ্রিন, ইয়েলো ও রেড জোনে ভাগ করে যানবাহন ও বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ করা হবে। গ্রিন জোনে ঢাকা মেডিকেল, বাংলা একাডেমি ইত্যাদি জনবহুল জায়গা থাকবে। ইয়েলো জোনে অডিটরিয়ামের মতো এরিয়া, যেখানে অতিথি, অ্যালামনাই ও অন্য ব্যক্তিরা যথাযথ পরিচয় প্রদানের মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারবেন। আর রেড জোনে আবাসিক ও একাডেমিক এরিয়া, যেখানে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হবে।’
ইশতেহারের প্রথম দফায় শিক্ষা ও গবেষণাকে প্রাধান্য দিয়ে আধুনিক, আনন্দময়, বসবাসযোগ্য ও নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলা অংশে আবিদুল ইসলাম বলেন, গেস্টরুম–গণরুম সংস্কৃতি, জোরপূর্বক রাজনৈতিক কর্মসূচি ও দমন–নিপীড়নের মতো ঘৃণিত চর্চা বন্ধ করে ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলদারত্ব থেকে চিরকালের জন্য মুক্ত করা হবে।
এ ছাড়া ১০ দফা ইশতেহারে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সংকট সমাধানে বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে।