সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের বুক সর্টার অর্পনা কুমারীকে স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অনিয়মের গুরুতর অভিযোগের তদন্ত শেষে এই সিদ্ধান্ত নেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা-২০২৩ (সংশোধিত)’-এর ৪(২) ধারা অনুযায়ী তাঁকে ‘Removal from service’ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সিন্ডিকেটের ৪৮তম সভায় উপস্থাপন করা হলে তা বিবেচনায় নিয়ে গত ৩১ মে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত নম্বর ৪৮.৯(চ) অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তদন্ত সূত্রে জানা যায়, অর্পনা কুমারীর বিরুদ্ধে চাকরিতে যোগদানের সময় নির্ধারিত বিধি ও যোগ্যতা উপেক্ষা করে অনিয়মতান্ত্রিক উপায়ে নিয়োগ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে এলে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাঁকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, এই আদেশ ৪ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে সরকারি নিরীক্ষা দল কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আর্থিক নিরীক্ষায় তাঁর দায়িত্বে থাকার সময়ে কোনো আর্থিক দায়দেনা নিরূপিত হলে তার দায়ভারও অর্পনা কুমারীকেই বহন করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, নিয়োগপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে এমন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নিয়োগপ্রক্রিয়ায় এ ধরনের অপেশাদার ও অনিয়মতান্ত্রিক তথ্যাদি পাওয়া গেলে অন্যদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলিমুল ইসলাম বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করেও নকল মার্কশিট দেখিয়ে তৎকালীন ভিসির সময়ে জালিয়াতি করে তিনি চাকরি নিয়েছিলেন। যার কারণে ৪৮তম সিন্ডিকেট সভায় তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তাঁর কাজের প্রতি কোনো অভিজ্ঞতাও নেই। তাঁকে শোকজ করা হলে তিনি জানান, ১ লাখ টাকার বিনিময়ে এই মার্কশিট বানিয়েছেন। তাঁকে কোন প্রক্রিয়ায় চাকরি দেওয়া হলো, সেটা আমরা খুঁজে বের করছি।’