জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ সালাম-বরকত হল থেকে কাঠের বাটযুক্ত দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর হল প্রশাসন আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে অস্ত্রটি হস্তান্তর এবং এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে৷
বুধবার (২৫ জুন) সকাল সাড়ে ৯টায় হলের এ-ব্লকের পশ্চিম দিকে অবস্থিত টয়লেটের ফলস ছাদের উপরে পাইপ গানটি দেখেন পরিচ্ছন্নতা কর্মী সুজন বাবু। এরপর হল প্রশাসনের কাছে তিনি আগ্নেয়াস্ত্রটি হস্তান্তর করেন।
অস্ত্রটি সম্পর্কে জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার এসআই মাহমুদুল বলেন, এটি একটি দেশীয়ভাবে তৈরি পুরাতন কাঠের বাটযুক্ত পাইপগান, যার দৈর্ঘ্য বাটসহ ২৩ ইঞ্চি।
হল প্রশাসন জানায়, শহীদ সালাম ও বরকত হলের এ-ব্লকের পশ্চিম দিকে অবস্থিত ২২৬নং কক্ষ সংলগ্ন টয়লেটের ফলস ছাদের উপরে পাইপগানটি ছিল। হলের পরিচ্ছন্নতা কর্মী সুজন বাবু সুইপিং কাজের জন্য ফলস ছাদ থেকে লাঠির ব্রাশ টেনে বের করতে যান। তখন ব্রাশের সঙ্গে কাঠের বাটওয়ালা একটি পুরাতন আগ্নেয়াস্ত্র বের হয়ে আসে। এরপর পরিচ্ছন্নতা কর্মী সুজন বাবু আগ্নেয়াস্ত্রটি হল অফিসে এনে জমা দেন। পরে হল প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশেদুল আলমকে জানালে তিনি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের পাঠান এবং আশুলিয়া থানায় অবহিত করেন। পরবর্তীতে দুপুর সাড়ে ১২টায় পুলিশের কাছে আগ্নেয়াস্ত্রটি হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে শহীদ সালাম-বরকত হলের পরিচ্ছন্নতা কর্মী শ্রী সুজন বাবু বলেন, বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার সময় অফিসে আসি। দৈনন্দিন কাজের মতো আজকেও আমার কর্তব্যরত সুইপিং কাজ শুরু করি। হলের এ ব্লকে ২য় তলা পশ্চিম পাশে ওয়াশরুমে আমার সুইপিং কাজের জন্য রাখা লাঠি ব্রাশ ফলস ছাদ থেকে টেনে বের করি। তখন লাঠি ব্রাশের সঙ্গে কাঠের বাটওয়ালা একটি পুরাতন আগ্নেয়াস্ত্র বের হয়ে আসে। সঙ্গে সঙ্গে আমি আগ্নেয়াস্ত্রটি হল অফিসে এনে জমা দেই৷
এদিকে হল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের পর বেলা ১১টায় হল কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি সভা করেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল হালিম। এ বিষয়ে তিনি জানান, আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধারের পর তৎক্ষণাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশেদুল আলমকে জানানো হয়৷ পরবর্তীতে তিনি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের পাঠান এবং আশুলিয়া থানা পুলিশকে অবহিত করেন। এরপর আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে আগ্নেয়াস্ত্রটি হস্তান্তর করা হয়।
তিনি আরও জানান, জরুরি সভায় হল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য সহকারী অধ্যাপক এসএমএ মওদুদ আহমেদকে সভাপতি করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- হলের আবাসিক শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক ইসতিয়াক রায়হান ও সিয়াম আহমেদ। আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদানের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
হল প্রাধ্যক্ষ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে অবহিত করলে নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তা মো. জেফরুল হাসান চৌধুরী ও এএসএম রাশিদুল হাসান এবং হল প্রশাসন আগ্নেয়াস্ত্রটি আশুলিয়া থানার এসআই মাহামুদুল হাসানের কাছে হস্তান্তর করে।