✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
অর্থ-বাণিজ্য

৫০ বছরে এমজিআই, চার শিল্পে নতুন বিনিয়োগের পরিকল্পনা জানাল কোম্পানি

দেশের প্রতি দুই পরিবারের মধ্যে একটি পরিবার মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) কোনো না কোনো পণ্য ব্যবহার করে। আর এমজিআইয়ের তৈরি পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের ৫২টির বেশি দেশে। ভোগ্যপণ্য, নির্মাণসামগ্রী, হেলথ ও হাইজিন পণ্য, পাল্প ও পেপার, ফিডস, ফাইবার, বেসিক ও পেট্রোকেমিক্যাল, প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং, শিপিং ও শিপবিল্ডিং, এনার্জি ও পাওয়ার, লজিস্টিকস, এভিয়েশন এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন খাতে ছড়িয়ে আছে গ্রুপটির ব্যবসা।

দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী হিসেবে ৫০ বছরে পর্দাপণ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান গ্রুপটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল। আজ রোববার রাজধানী ঢাকার গুলশানে এমজিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।


মোস্তফা কামাল বলেন, প্রতিটি ব্যবসায়িক পদক্ষেপের পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি। দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত করার জন্য তাঁরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান তাঁরা।

৫০ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এমজিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান বিউটি আক্তার, পরিচালক তাহমিনা মোস্তফা, তানজিমা মোস্তফা, তানভীর মোস্তফা ও তাসনিম মোস্তফাসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

* ১৯৭৬ সালে কামাল ট্রেডিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ব্যবসায়ী হিসেবে মোস্তফা কামালের পথচলা শুরু।
* প্রথম কারখানা মেঘনা ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রতিষ্ঠা ১৯৮৯ সালে নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে  
নতুন বিনিয়োগ পরিকল্পনা
* শিগগিরই ইস্পাত ও গ্লাস কারখানা প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করবে গ্রুপটি
* পেপার ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতেও বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কোম্পানির ৫০ বছরের পথচলায় বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের গল্পও তুলে ধরেন মোস্তফা কামাল। তিনি জানান, ১৯৭৬ সালে কামাল ট্রেডিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ব্যবসায়ী হিসেবে তাঁর পথচলা শুরু হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি শুরু করেন। একপর্যায়ে দেশেই আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদনের পরিকল্পনা করেন।

মোস্তফা কামাল বলেন, বিদেশ থেকে কাঁচামাল এনে দেশে পণ্য উৎপাদন করলে একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগ হবে। সেই ভাবনা থেকেই ১৯৮৯ সালে নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে মেঘনা ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ নামে প্রথম কারখানা স্থাপন করা হয়। মেঘনা নদীর তীরে ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু হওয়া এমজিআই আজ দেশের কোটি মানুষের আস্থার নাম।

এমজিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, বর্তমানে শিল্পগোষ্ঠীটির সমুদ্রগামী জাহাজ বহরে ২৩টি বাল্ক ক্যারিয়ার ও ২টি অয়েল ট্যাংকার রয়েছে। এরই মধ্যে তিনটি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম চালু করেছে এমজিআই। এ ছাড়া চতুর্থ আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে।

অনুষ্ঠানে এমজিআই পরিচালক তানজিমা মোস্তফা বলেন, প্রতিষ্ঠানের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আজকের এ অবস্থানে আসা সম্ভব হয়েছে। প্রায় ৫০ হাজার কর্মীর প্রতিষ্ঠান এমজিআই এখন শুধু অর্থনৈতিক শক্তি নয়, একই সঙ্গে বড় দায়িত্বেরও জায়গা হিসেবে তৈরি হয়েছে।

কোম্পানির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের সবাইকে ভাবার অনুরোধ জানান আরেক পরিচালক তাসনিম মোস্তফা। তিনি বলেন, সবার অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে আজকের এ অবস্থানে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। ফলে এখন ৫০ বছরে পদার্পণ উদ্যাপনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ নিয়েও সবাইকে ভাবতে হবে।

অনুষ্ঠানে নতুন বিনিয়োগ পরিকল্পনার কথাও জানান এমজিআই চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। তিনি জানান, শিগগিরই ইস্পাত ও গ্লাস কারখানা প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করবেন তাঁরা। এ ছাড়া পেপার ও পেট্রোকেমিক্যাল খাতেও বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।

মোস্তফা কামাল বলেন, ‘শুধু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবেই নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেও আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। সততা, পরিশ্রম ও অধ্যবসায়কে পুঁজি করে আরও এগিয়ে যেতে হবে। সবার আগে দেশের স্বার্থকে মাথায় রাখতে হবে।’

এই সম্পর্কিত আরো