সাবেক সংসদ-সদস্যদের (এমপি) শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ২৪টি বিলাসবহুল গাড়ি এখন কাস্টমসের গলার কাঁটা। প্রথম দফায় এসব গাড়ি নিলামে তোলা হলেও উপযুক্ত দাম পাওয়া যায়নি। আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে দ্বিতীয় দফায় নিলামে তুলতে অনাগ্রহী কাস্টমস।
গাড়ি নিলামের পরিবর্তে বিক্রির জন্য নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ব্যবহারকারীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
‘গাড়িগুলো আমরা নিলামে দিয়েছিলাম। তবে আশানুরূপ ফল পাইনি’ উল্লেখ করে আবদুর রহমান খান বলেন, এখন আমরা কিছু বিকল্প চিন্তা করছি। যেমন কোনো কোনো সরকারি সংস্থা প্রস্তাব দিয়েছে, তারা ৬০ শতাংশ দামে গাড়িগুলো নিতে চায়। আমরা জলের দরে বিক্রি করতে চাই না।
তিনি বলেন, একেকটি গাড়ির দাম ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা। যদি উপযুক্ত দাম না পাই, তাহলে আরও ভালো ব্যবহার কীভাবে করা যায়, তা সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেব।
এসব গাড়ি বছরের পর বছর ফেলে স্ক্র্যাপ করার পক্ষে নই, অচিরেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সাবেক সংসদ-সদস্যদের আনা গাড়িগুলো নিলামে তোলে চট্টগ্রাম কাস্টমস। ২৪টি গাড়ির মধ্যে ১০টির বিড পড়েনি। বাকি ১৪টি গাড়ির যে বিডমূল্য পড়ে, তা সংরক্ষিত মূল্যের সর্বনিম্ন দশমিক ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৩২ শতাংশ। গাড়িভেদে দাম ওঠে সর্বনিম্ন ১ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। গাজীপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য আখতারউজ্জামানের আনা ল্যান্ড ক্রুজার জেডএক্স মডেলের গাড়িটি সংরক্ষিত মূল্য ৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা নির্ধারণ করে কাস্টমস। নিলামে এ গাড়ির দাম ওঠে মাত্র এক লাখ টাকা।
এ অবস্থায় গাড়িগুলো দ্বিতীয় দফা নিলামে না তুলে রাজস্ব ঝুঁকি ও আইনি বাধ্যবাধকতার কথা জানিয়ে ১১ মার্চ এনবিআরকে চিঠি দিয়ে দিকনির্দেশনা চায় চট্টগ্রাম কাস্টমস। চিঠিতে বলা হয়, প্রথম দফায় পণ্যের বিডমূল্যের ন্যূনতম ৬০ শতাংশ মূল্য পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় দ্বিতীয় দফায় নিলাম করার বিধান রয়েছে। দ্বিতীয় দফা নিলামে প্রথম দফার তুলনায় কম দাম পাওয়া গেলেও দুই নিলামের সর্বোচ্চ মূল্য হাঁকানো বিডারের অনুকূলে গাড়ি খালাসের আইনি বাধ্যবাধকতা তৈরি হবে। যাতে রাজস্ব ঝুঁকি তৈরির শঙ্কা তৈরি হবে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এই গাড়িগুলো শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করেছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্যরা। সরকারের পটপরিবর্তনের পর গত ৬ আগস্ট সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। শুল্কমুক্ত সুবিধাও বাতিল করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তাতে এই গাড়িগুলো ফেলে যান সাবেক সংসদ সদস্যরা।