মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ শুল্কহার নিয়ে তৃতীয় দফার আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আলোচনার জন্য সময় চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
আজ সোমবার (১৪ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে ঢাকায় ফিরে এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আশা করছি, যুক্তরাষ্ট্র যৌক্তিক শুল্কহার নির্ধারণ করবে। আর বাংলাদেশ তার সক্ষমতা দিয়ে মার্কিন বাজারে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে।’
এই দ্বিতীয় দফার শুল্ক আলোচনা শেষ হয়েছে গত শুক্রবার (১১ জুলাই), যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে। তবে আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে উপদেষ্টা বিস্তারিত কিছু জানাননি। কারণ, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এ বিষয়ে একটি ‘নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট’ বা গোপনীয়তা চুক্তি রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনের আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নেন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক, ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান ও এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হাফিজুর রহমান। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান ও অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী।
বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের অভিঘাত হতে পারে। তাই সরকার সর্বোচ্চ স্তর থেকে বিষয়টি দেখছে এবং কিছু পদক্ষেপ এরই মধ্যেই নেওয়া হয়েছে। আরও কিছু করতে হবে। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী কৌশল নেওয়া হবে।
গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপ করে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার মুখে তা ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়।
তবে ৮ জুলাই বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এক চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করা হবে ১ আগস্ট থেকে।
এই অবস্থায় অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে পৌঁছেছে। বাংলাদেশও সে উদ্যোগ নিয়েছে। ইউএসটিআরের সঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বে একাধিক দফায় বৈঠক হয়েছে, যদিও এখনো দুই দেশ সব বিষয়ে একমত হতে পারেনি।
বাংলাদেশ আশা করছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছে একতরফা এই শুল্ক আরোপ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে।